পদ্মার পানি আমাদের অধিকার, ভারতের দয়া নয়: মির্জা ফখরুল
- চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৮:৪৯ পিএম, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
চাঁপাইনবাবগঞ্জে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পদ্মা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা পাওয়া বাংলাদেশের অধিকার, এটি ভারতের অনুগ্রহ নয়। তার অভিযোগ, উজানের নদীগুলোর পানিবণ্টনে বঞ্চনার পাশাপাশি বাণিজ্য ও সীমান্ত হত্যার মতো ইস্যুতেও ভারত সংকট তৈরি করছে, যা আর চলতে দেওয়া যাবে না।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে পদ্মা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে সমন্বয় কমিটি আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “১৯৭৬ সালে মাওলানা ভাসানীর লং মার্চের পর ১৯৭৭ সালে শহীদ জিয়া পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে উদ্যোগ নেন। পরে বেগম খালেদা জিয়াও বিষয়টি নিয়ে কাজ করেন। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৬ সালে গ্যারান্টি ক্লজ ছাড়া একটি চুক্তি করে। আগামী বছর সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। এরপর কী হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।”
২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “ওই নির্বাচনে এমন শক্তিশালী সরকার গঠন করতে হবে, যারা ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিকভাবে শক্ত অবস্থান নিয়ে এই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারবে।”
তিনি আরও বলেন, “পদ্মার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলমান আন্দোলন দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত চলবে। তারেক জিয়া এ আন্দোলনের নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক জনমত তৈরি করাও প্রয়োজন।”
গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “ভারতের আগ্রাসন মোকাবেলায় গঙ্গা ব্যারেজ তৈরি করতে হবে। বর্ষায় পানি ধরে রেখে শুষ্ক মৌসুমে কৃষিসহ বিভিন্ন খাতে তা ব্যবহার করা সম্ভব হবে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এ ব্যারেজ নির্মাণের উদ্যোগ নেবে।”
দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এ দেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ। ধর্মকে ভালোবাসে কিন্তু ধর্মান্ধ নয়। বাণিজ্য এখন সংকটে, বিদেশি বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে গেছে। নির্বাচিত সরকার ছাড়া এ সংকট দূর হবে না। সময়মতো সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে।”
নতুন প্রজন্মকে দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “দেশকে এগিয়ে নিতে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। স্বৈরাচার যেন আর ফিরে না আসে, সে জন্য সজাগ থাকতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কর্মসংস্থান, কৃষকদের সার-বীজ সহায়তা, বিচার বিভাগ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সংস্কারে কাজ করবে।”
জামায়াতের সমালোচনায় তিনি বলেন, “তারা রাজনীতিতে সংকট সৃষ্টি করছে। পিআর পদ্ধতির দাবি তুলছে, অথচ সাধারণ জনগণ পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে কিছুই জানে না। তারা সরকার গঠনের স্বপ্ন দেখছে, এটি এত সহজ নয়। ৫১ শতাংশ ভোট পেতে হবে, অথচ শেষ নির্বাচনে তারা ৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে। জামায়াত মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গণহত্যা করেছে।”
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর-৩ আসনের সাবেক এমপি হারুনুর রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনে প্রার্থী শাহজাহান মিয়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের প্রার্থী আমিনুল ইসলাম, রাজশাহী সিটির সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহীর প্রার্থী আবু সাঈদ চাঁদসহ স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা।