গতবার যে চামড়া বিক্রি হয়েছিল ৬০০ টাকা, এবার সেটা ১০০ টাকা


গতবার যে চামড়া বিক্রি হয়েছিল ৬০০ টাকা, এবার সেটা ১০০ টাকা

পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানির চামড়া কেনা-বেচা নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার বচসা খুলনায় নিয়মিত হয়ে উঠছে। বিক্রেতারা বলছেন, ৪-৫ মণ ওজনের গরুর চামড়ার দাম ৪০০ টাকা বলে। এতে মেজাজ ঠিক রাখা কঠিন। আবার চামড়ায় সমস্যা বলে দাম ১০০ টাকা বলে।

ক্রেতারা বলছেন, এবারের গরুর চামড়ায় করোনাসহ পক্স রয়েছে। তাই চামড়ার দাম কম। আর ঘরোয়াভাবে ছাড়ানোর সময় চামড়া কাটা পড়া, ফুটো হাওয়াসহ নানা সমস্যা থাকছে।

প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, গরুর এলএসডি (লাম্প স্ক্রিন ডিজিস) হতে পারে। এ ডিজিজ হওয়া গরুতে কোরবানি হওয়ার কথা না। কিন্তু অনেকেই এগুলো মানে না। তবে গরুতে করোনা শনাক্ত বা এ ধরনের কোন রোগ নেই।

ছোট বয়রার মো. মাকসুদ আলম চামড়া বিক্রি করার জন্য আসেন শেখপাড়া চামড়াপট্টিতে। তিনি বলেন, ‘১ লাখ ১৫ হাজার টাকার সাড়ে ৪ মণ ওজনের গরুর চামড়ার দাম বলে ৪০০ টাকা। কিন্তু সরকার দাম বেঁধে দিয়েছে ১০৫০ টাকা। তাহলে আমরা দাম পাই না। কী আর করতে পারি। ওরা (ক্রেতা) বলে চামড়ায় নাকি রোগ আছে। চামড়ার লোমে সমস্যা হলে ট্যানারি থেকে লোম ফেলে দেবে। ওরা নিবে চামড়াটা। লোমের স্পটের কারণে চামড়ার দাম কম হবে কেন?’

টুটপাড়ার রহমান ফারাজি বলেন, ‘চামড়ায় একটু ফুটো আর লোমে স্পট থাকায় দাম বলে ১০০ টাকা। গত বছর একই সাইজের চামড়া ৬০০ টাকায় বিক্রি করি। এবার দাম বলে ১০০। চামড়ার বেচে টাকাটা মাদ্রাসায় দিতে চেয়েছিলাম।’

খুলনা জেলা কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো: বাবর বলেন, ‘চামড়ায় পক্স আছে, করোনাও শনাক্ত আছে। এ স্পট জায়গায় ব্লু করলে নেট হয়ে যায়। নষ্ট হয়ে গেছে। তাই স্পট থাকা চামড়ার দাম নেই।’

তিনি জানান, ভালো চামড়া ১৪০০ টাকায়ও কিনেছেন তিনি। ভালো চামড়ার দাম দেওয়া যায়। কিন্তু খারাপ চামড়ার দাম দিয়ে লোকসান করা যাবে না।

চামড়া ব্যবসায়ী মাসুদ লেদারের মাসুদ বলেন, দুই দিনে দেড়শ চামড়া কিনেছেন তিনি। ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত দাম দিয়েছেন। কারণ চামড়ায় স্পট রয়েছে। রয়েছে করোনার দাগ। আর কাটা-ফুটোতো আছেই। ফ্রেশ চামড়া তিনি পাননি। তাই দাম দিতে পারেননি।

শ্রমিক মজিদ সরদার বলেন, ‘একটা চামড়ায় ২ বার লবণ দেওয়া লাগে। একেকটা চামড়ায় ৮-১০ কেজি লবণ লাগে। লবণের কেজি ২৫ টাকা। এটাও চামড়ার দামের আওতায় পড়ে।’

খুলনা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ পরিচালক ড. নুরুল্লাহ মো. আহসান বলেন, ‘গরুর করোনা শনাক্তবিষয়ক বক্তব্য সঠিক নয়। গরুর এলএসডি আছে। এটা হলে সে গরু কোরবানি দেওয়া অনুচিত। কিন্তু আমরা তা মানি না। এই এলএসডির কারণে ক্রেতারা দাম কম দেয়। এটা করোনা নয়।’

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×