বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি গঠন নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষে নারীসহ আহত ৫০


বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি গঠন নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষে নারীসহ আহত ৫০

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি গঠনের বিষয় নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে নারীসহ প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর বাজারে এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে বিএনপির ৪নং ওয়ার্ড কমিটি গঠনের বিষয় নিয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা সাজ্জাদ মাহমুদ সাজিব এবং ইউপি সদস্য কামরুল ইসলামের সমর্থকদের মাঝে বিরোধ চলছিল। সোমবার রাতে প্রথম দফায় আংশিক হাতাহাতি সংঘটিত হয়। এরপর মঙ্গলবার দুপুরে দুই ঘণ্টাব্যাপী দ্বিতীয় দফার সংঘর্ষে উভয় পক্ষের নারীসহ অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়।

গুরুতর আহতদের মধ্যে রয়েছেন—মাহিন মিয়া (১৭), কাইয়ুম (৩৩), এমারুল (৪০), লাহিম মিয়া (৫০), মুজির আলী (৩০), সোয়েব (৪০), আব্দুল্লাহ (৩০), সেলেম মিয়া (৪৫), শিমুল (৩০), এবং এমারুল (৪৩)। আহতদের মধ্যে ১০ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, বাকিদের জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা চলছে। বর্তমানে পুলিশের সহযোগিতায় এলাকা শান্ত রয়েছে।

ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম জানান, তার ছোট ভাই অমির ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন। প্রায় তিন শতাধিক সমর্থকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত মৌখিক ভোটে অমিরের প্যানেল বিজয়ী হয়। তবে সাজিব গোষ্ঠীর কেউ নির্বাচিত না হওয়ায় তারা কমিটি গঠন থেকে বের হয়ে প্রতিবাদ করেন এবং ধাওয়া-পালটা ধাওয়া শুরু হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মালিক মিয়া ঘটনাস্থলে পৌঁছে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানালে, সাজিব গোষ্ঠীর লোকজন তার সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। এতে অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হন এবং কামরুল ইসলামের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর হয়।

অপরদিকে, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাজ্জাদ মাহমুদ সাজিব বলেন, “৪নং ওয়ার্ড কমিটি গঠনের ঘটনায় আমি কোনো পক্ষ নই। এটি আব্দুল মতিন গ্রুপ ও অমির গ্রুপের দ্বন্দ্ব। আমি কমিটি গঠনের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলাম। বক্তব্য রাখার পর চলে গিয়েছিলাম। সংঘর্ষের খবর পেয়ে উপজেলা যুগ্ম আহ্বায়ক ও অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেছি।”

উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মালিক মিয়া যুগান্তরকে জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং তিনি নিজেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন। এ বিষয়ে রাতের মধ্যে বসে মীমাংসার পরিকল্পনা রয়েছে।

জামালগঞ্জ থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, বিএনপির কমিটি গঠনের কারণে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। দফায় দফায় সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে এবং বর্তমানে পুনরায় সংঘর্ষের আশঙ্কা নেই। কোনো অভিযোগ এখনও পাওয়া যায়নি, তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×