আড়াই কোটি টাকার সেতুতে উঠতে হয় মই দিয়ে, দুর্ভোগে হাজারো মানুষ


আড়াই কোটি টাকার সেতুতে উঠতে হয় মই দিয়ে, দুর্ভোগে হাজারো মানুষ

ঝালকাঠির নলছিটিতে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি সেতু দীর্ঘ তিন বছর ধরে জনসাধারণের জন্য ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে আছে। সেতুর মূল কাঠামোর কাজ শেষ হলেও দুই পাশের সংযোগ সড়ক (এপ্রোচ) নির্মাণ না হওয়ায় স্থানীয়রা সুবিধা নিতে পারছেন না। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেতু পারাপারের জন্য এখন কাঠের মই ব্যবহার করতে হয়, যা ঝুঁকিপূর্ণ।

স্থানীয়রা বলেন, “বিকল্প পথ ব্যবহার করতে গিয়ে সময় ও অর্থ- দুইয়েরই অপচয় হচ্ছে।”

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নলছিটি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আইবিআরপি প্রকল্পের আওতায় ২০২২ সালের ২ মে পৌর শহরের থানার খালের ওপর ৩১ মিটার দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৪৬ লাখ ৩ হাজার ৩১৯ টাকা। দরপত্র অনুযায়ী কাজটি পেয়েছে মেসার্স শান্তা এন্টারপ্রাইজ। এক বছরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়সীমা ২০২৩ সালের ৬ মার্চ পার হয়ে যায়। মূল সেতু নির্মিত হলেও সংযোগ সড়কের কাজ এখনও শুরু হয়নি।

সেতুর বর্তমান পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখে জানা যায়, স্থানীয়রা কাঠের মই ব্যবহার করে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন। বিশেষ করে বয়স্করা, নারী ও স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীরা বেশি সমস্যায় পড়ছেন। সেতুর দুই পাশে নির্মিত ইউনি-ব্লক সড়কও ব্যবহার অনুপযোগী। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন- শুরু থেকে কাজের সময়ে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি ছিল। সেতুর গোড়ায় মাটি না ভরাট হওয়ায় এটি ‘গলার কাঁটা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা বেলায়েত হোসেন নান্নু, কামরুল ইসলাম ও রিয়াজ হোসেন জানান, “সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি কোনো কাজে আসছে না। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে মই বেয়ে পার হতে হয়। বর্ষায় নৌকা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না।”

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক শাওন খান বর্তমানে একটি মামলায় কারাগারে থাকায় তার মন্তব্য জানা যায়নি।

নলছিটি উপজেলা প্রকৌশলী আজিজুল হক বলেন, “সেতুর পাশে জমির মালিকরা মাটি ভরাটে সহযোগিতা করেননি, তাই সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হয়নি। বিষয়টি লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, দ্রুত সমাধান হবে।”

তবে স্থানীয় বাসিন্দা বেলায়েত হোসেন নান্নু দাবি করেন, “শুরু থেকেই সেতুর নকশাগত ত্রুটি ছিল। সোজা সড়কের ওপর আড়াআড়ি সেতু নির্মাণ করে স্থানীয়দের জমির ক্ষতি করা হয়েছে। জমি সংক্রান্ত বাধা কয়েক মাস আগে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে মীমাংসা করা হয়েছে। এখন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইচ্ছাকৃতভাবে মাটি ভরাট করছে না।”

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×