৫২ বছরে সবচেয়ে ভয়াবহ পতনের মুখে মার্কিন ডলার


৫২ বছরে সবচেয়ে ভয়াবহ পতনের মুখে মার্কিন ডলার

মার্কিন ডলার ভয়াবহ পতনের মুখে পড়েছে। বছরের প্রথমার্ধ শেষ হতে না হতেই বৈশ্বিক মুদ্রাগুলোর বিপরীতে ডলার সূচক ১০ শতাংশের বেশি হারিয়েছে-যা ১৯৭৩ সালে ফ্লোটিং এক্সচেঞ্জ রেট চালু হওয়ার পর প্রথমার্ধে সবচেয়ে বড় ধস। খবর রয়টার্স। 

বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে প্রকাশ্যে ‘ব্যর্থ’ আখ্যা দেয়া এবং আসন্ন নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগের ঘোষণার প্রভাবেই এই ধস নেমেছে। এর ফলে ফেডের স্বাধীনতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে বাজারে।

এছাড়া ইউরোপ ও এশিয়ার অর্থনীতির কিছুটা পুনরুত্থান এবং জার্মানির বাজেট বৃদ্ধি, ন্যাটো দেশগুলোর প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধির ঘোষণাও ডলারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ইউরোর মান চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ১.১৭ ডলার ছাড়িয়েছে, সুইস ফ্রাঁ এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী এবং ব্রিটিশ পাউন্ড ২০২১ সালের পর সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে।

ট্রাম্প ন্যাটো সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে বলেন, তিনি শিগগিরই জেরোম পাওয়েলের স্থলাভিষিক্ত করার জন্য নতুন ফেড চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা করবেন। তিনি আরও বলেন, ‘পাওয়েল একজন ভয়ানক চেয়ারম্যান, তাকে সরাতে হবে।’

ফেড চেয়ারম্যানের ওপর এমন রাজনৈতিক চাপ ফেডের স্বাতন্ত্র্য ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। ইতিমধ্যে মার্কেট ফিউচার ইঙ্গিত দিচ্ছে, ২০২৭ সালের মধ্যে সুদের হার কমে ৩ শতাংশে নেমে যেতে পারে।

তেলবাজারেও দেখা গেছে নাটকীয় পরিবর্তন। ইসরায়েল ও ইরানের যুদ্ধবিরতির ফলে অপরিশোধিত তেলের দাম ২০ শতাংশ কমে গেছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইরানের ওপর আরোপিত তেল বিক্রির নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করা হতে পারে। এই পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও বিশ্ববাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ডলারের পতনের মাঝেও শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। এমএসসিআই’র অল-কান্ট্রি সূচক নতুন রেকর্ড গড়েছে। নাসডাক ১০০-ও সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে। এস\এন্ড পি (S\&P) ৫০০ সূচকও সর্বোচ্চ থেকে মাত্র ১ শতাংশ দূরে রয়েছে।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রে মে মাসের বাণিজ্য ঘাটতি, টেকসই পণ্যের অর্ডার, বেকার ভাতার দাবি, পেন্ডিং হোম সেলস এবং করপোরেট আয়ের একাধিক রিপোর্ট প্রকাশিত হবে। এছাড়া ব্যাংক অব ইংল্যান্ড, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ফেড কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখবেন।

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং নীতিগত অনিশ্চয়তা ডলার ও বিশ্ববাজারে বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। আর তারই প্রাথমিক প্রমাণ হচ্ছে, এই বছরের প্রথম ছয় মাসে ডলারের রেকর্ডধর্মী পতন।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×