যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে বিশ্ববাজারে বড় বিপদে ভারত
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৫:৪০ পিএম, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
দুবাই এয়ারশোতে শুক্রবার ভারতের স্বদেশি লাইট কমব্যাট জেট তেজস বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা দেশটির বিমানবিমান রপ্তানি সম্ভাবনায় নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। দুর্ঘটনায় পাইলট উইং কমান্ডার নমাংশ স্যলের মৃত্যু হয়েছে। এখনও দুর্ঘটনার সঠিক কারণ জানা যায়নি।
রোববার (২৩ নভেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, মার্কিন বিশ্লেষক ডগলাস এ. বার্কি বলেন, “দুবাইয়ের মতো বড় মঞ্চে এমন দুর্ঘটনার চিত্র অত্যন্ত নেতিবাচক। তবে আশা করা যায়, নেতিবাচক প্রচারণার পরও তেজস আবার গতি ফিরে পাবে।”
দুবাই এয়ারশো বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম বিমানমেলা। এমন বড় আয়োজনে বিমান বিধ্বস্ত হওয়া বিরল। তবে এর আগে প্যারিস এয়ারশোতে রাশিয়ার সু-৩০ ও মিগ-২৯ বিধ্বস্ত হলেও পরবর্তীতে সেগুলো বিভিন্ন দেশে বিক্রি হয়েছিল।
১৯৮০-এর দশকে পুরনো মিগ-২১ প্রতিস্থাপনের জন্য শুরু হওয়া তেজস প্রকল্পে ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ চলছে। রাষ্ট্রায়ত্ত হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড (HAL) ভারতের জন্য ১৮০টি উন্নত এমকে-১৪ ভ্যারিয়েন্ট তৈরির পরিকল্পনা করছে। তবে জিই এরোস্পেসের ইঞ্জিন সরবরাহ সমস্যার কারণে ডেলিভারি পিছিয়ে যাচ্ছে।
হাল-এর সদ্য-অবসর নেওয়া এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই দুর্ঘটনা আপাতত তেজসের রপ্তানি সম্ভাবনা বন্ধ করে দিয়েছে। রপ্তানির লক্ষ্য ছিল এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশ। ২০২৩ সালে মালয়েশিয়াতেও হাল-এর একটি অফিস খোলা হয়েছিল।
ভারতীয় বিমানবাহিনীতে বর্তমানে ২৯টি স্কোয়াড্রন রয়েছে, যেখানে অনুমোদিত সংখ্যা ৪২। পুরনো মিগ-২৯, জাগুয়ার ও মিরাজ ২০০০-এর সংস্করণগুলো আগামী বছরগুলোতে অবসরে যাবে। তেজসকে এগুলোর বিকল্প হিসেবে ধরা হয়েছিল, কিন্তু উৎপাদন সমস্যার কারণে তা সময়মতো পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
ঘাটতি পূরণের জন্য ভারত ফরাসি রাফাল, মার্কিন এফ-৩৫ বা রাশিয়ার সু-৫৭ কেনার বিষয় বিবেচনা করছে। তবে বিমানবাহিনীর বহরে বর্তমানে থাকা প্রায় ৪০টি তেজসের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
বিশ্লেষক ওয়াল্টার লাডউইগ বলেন, “তেজসের আন্তর্জাতিক বিক্রি যতটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো এটি ভবিষ্যৎ ভারতীয় যুদ্ধবিমান প্রকল্পের জন্য শিল্প ও প্রযুক্তিগত ভিত্তি তৈরি করছে।”