যুদ্ধবিরতির মাঝেই গাজায় ফের ইসরায়েলি হামলা, নিহত অন্তত ২৪
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৯:২৯ এম, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আবারও দমে না থাকা সহিংসতা ফিরেছে। ছয় সপ্তাহ ধরে বহাল থাকা যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েলি বিমান ও ড্রোন হামলায় অন্তত ২৪ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। হতাহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৮৭ জন। গাজার কর্তৃপক্ষ নতুন এই অভিযানকে যুদ্ধবিরতির আরেকটি স্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে বর্ণনা করেছে। আল জাজিরা রোববার ২৩ নভেম্বর এসব তথ্য প্রকাশ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, শনিবার প্রথম হামলাটি হয় উত্তর গাজা সিটির একটি গাড়িতে। এরপর দেইর আল-বালাহ ও নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরেও বিস্ফোরণ ঘটে। গাজা সিটির রিমাল এলাকায় ড্রোন হামলায় অন্তত ১১ জন নিহত ও ২০ জন আহত হন বলে জানান আল-শিফা হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রামি মোহান্না।
দেইর আল-বালাহতে একটি বাসাবাড়িতে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়, যার মধ্যে একজন নারীও আছেন। সেখানকার বাসিন্দা খলিল আবু হাতাব বলেন, হামলার মুহূর্তে “ভয়াবহ বিস্ফোরণ” হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, “বাইরে তাকাতেই দেখি পুরো এলাকা ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে। কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। কান ঢেকে রেখে তাঁবুতে থাকা সবাইকে দৌড়াতে বলি। পরে বুঝতে পারি পাশের বাড়ির ওপরের তলা উড়ে গেছে। যুদ্ধবিরতি খুবই ভঙ্গুর অবস্থায় আছে। এভাবে বাঁচা যায় না। কোথাও নিরাপদ নয়।”
গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১০ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল অন্তত ৪৯৭ বার তা লঙ্ঘন করেছে। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪২ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই শিশু, নারী ও প্রবীণ। বিবৃতিতে বলা হয়, “ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর এ ধরনের ধারাবাহিক ও গুরুতর যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও চুক্তির সুস্পষ্ট বিরোধী।”
অন্যদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় দাবি করেছে, গাজায় ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় হামাসের এক যোদ্ধা সৈন্যদের লক্ষ্য করে হামলা চালানোর পর তারা পাল্টা অভিযান শুরু করে। বিবৃতিতে বলা হয়, “ইসরায়েল পাঁচজন সিনিয়র হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।” তবে হামাস এখনো এ দাবির বিষয়ে মন্তব্য করেনি।
হামলার মধ্যেই হামাস অভিযোগ করেছে যে ইসরায়েল মনগড়া কারণ দেখিয়ে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে। তারা যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করে। বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা মধ্যস্থতাকারীদের জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানাই। যুক্তরাষ্ট্রকে তার আশ্বাস বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে এবং যুদ্ধবিরতি মানতে ইসরায়েলকে বাধ্য করতে হবে।”