ট্রান্সফরমার মিটার চুরির পর চিরকুট রেখে বিকাশে টাকা চায় চোরচক্র


ট্রান্সফরমার মিটার চুরির পর চিরকুট রেখে বিকাশে টাকা চায় চোরচক্র

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পল্লী বিদ্যুতের মিটার ও ট্রান্সফরমার চুরি একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিল্প, বাণিজ্যিক ও আবাসিক গ্রাহক- সবাইকে চোরচক্র নিশানা বানাচ্ছে, ফলে এলাকাবাসী চরম উদ্বেগে রয়েছেন। চোরেরা সাধারণত চুরি করা মিটার বা ট্রান্সফরমারের জায়গায় একটি চিরকুট রেখে যায়, যেখানে লেখা থাকে, “মিটার/ট্রান্সফরমার ফেরত পেতে নিচের নম্বরে যোগাযোগ করুন এবং বিকাশে টাকা পাঠান।” ভুক্তভোগীরা জানান, ১০-২০ হাজার টাকা দিলে মিটার ফেরত দেওয়া হয়, আর ট্রান্সফরমারের জন্য চাঁদা দাবি করা হয় ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত।

রোববার (২৩ নভেম্বর) মির্জাপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফরহাদ হোসেন জানান, শনিবার তার বাসার মিটার চুরি হয়েছে। চোরেরা ১৫ হাজার টাকা বিকাশে দিতে হবে বলে চিরকুটে লিখে গেছে। তিনি বিষয়টি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে জানিয়েছেন।

পল্লী বিদ্যুৎ অফিস জানায়, টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর গোড়াই ও মির্জাপুর জোনাল অফিস মিলিয়ে মোট ১ লাখ ৮০ হাজার গ্রাহক রয়েছে। এই এলাকায় চুরির ঘটনা সবচেয়ে বেশি।

গোড়াই শিল্পাঞ্চলের নাহিদ কটন মিলের নিরাপত্তা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান জানান, ৬ অক্টোবর মিলের দুই ইউনিটের মিটার, তার, ট্রান্সফরমার, কপার বার, রিয়েক্টরসহ ৬-৭ লাখ টাকার মালামাল চুরি হয়। এর আগে একাধিকবার চুরি হলেও এখনও কোনো মালামাল উদ্ধার বা চোর ধরা পড়েনি।

স্থানীয়রা জানান, রাতের অন্ধকারে চক্রটি শিল্প, বাণিজ্যিক ও আবাসিক মিটার নিয়ে যায়। চাঁদা দিলে অনেকেই মিটার ফেরত পেয়েছেন। বিভিন্ন ইউনিয়ন- মির্জাপুর পৌরসভা, মহেড়া, জামুর্কি, ফতেপুর, বানাইল, আনাইতারা, ওয়ার্শি, ভাতগ্রাম, ভাওড়া, বহুরিয়া, লতিফপুর, আজগানা, তরফপুর, বাঁশতৈলে চুরি প্রতিনিয়ত ঘটছে। তবে সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটছে গোড়াই শিল্পাঞ্চলে।

গোড়াই জোনাল অফিসের ডিজিএম খালিদ মো. সালাউদ্দিন বলেন, “মিটার ও ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় আমরা বিব্রত। একটি সংঘবদ্ধ চক্র এ কাজে জড়িত। অভিযোগ পেয়ে আমরা থানা পুলিশ ও র‌্যাব-১২-কে জানিয়েছি।”

মির্জাপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. মোকলেছুর রহমান জানান, “কয়েক দিনের ব্যবধানে বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছি। তথ্য পেয়ে পুলিশ ও র‌্যাব-১২ অভিযানে নামলে ট্রান্সফরমার–মিটার চোর চক্রের একজনকে আটক করেছে বলে জেনেছি।”

মির্জাপুর থানার এসআই রমিজ রায়হান বলেন, “পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ ও নাহিদ কটন মিলের পক্ষ থেকে মামলা হয়েছে। ট্রান্সফরমার ও মিটার চুরির সঙ্গে জড়িত একজনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অপরাধী চক্রকে ধরতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।”

স্থানীয়দের দাবি, এই সিন্ডিকেটভিত্তিক চোরচক্রকে দ্রুত দমন করা হোক এবং পল্লী বিদ্যুতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্ত করা হোক।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×