শাহজাহান চৌধুরীর গ্রেপ্তার চায় বিএনপি, জামায়াত বলছে বক্তব্যটি ব্যক্তিগত

চট্টগ্রাম অঞ্চলে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী দায়িত্বশীল সম্মেলনে জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্য ও চট্টগ্রাম নগর জামায়াতের সাবেক আমীর শাহাজাহান চৌধুরীর দেওয়া বিতর্কিত বক্তব্য সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। বক্তব্যটি নিয়ে বিএনপি গ্রেপ্তারের দাবি জানালে, জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি তার ব্যক্তিগত মতামত এবং দলের বক্তব্য নয়।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান বলেন, “জামায়াতের নেতা শাহাজাহান চৌধুরীর বক্তব্য প্রমাণ করে তারা নতুন করে একটি ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চায়। তার কথায় বোঝা যায়, আসন্ন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না। এই কারণে আমরা তার গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।”

জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ শাহজাহান সমকালকে জানান, “প্রশাসন পূর্ণ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে। এখানে দলীয় হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। চট্টগ্রাম নগর জামায়াতের সাবেক আমীরের দেওয়া বক্তব্য তার ব্যক্তিগত মতামত।”

শুক্রবার (২০ নভেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় আমীর ডা. শফিকুর রহমান। সমালোচিত বক্তব্যে শাহাজাহান চৌধুরী বলেন, “নির্বাচনে জয়লাভ করতে হলে প্রশাসনকে, প্রশাসনের সবাইকে আমাদের আন্ডারে নিতে হবে। পুলিশকে, ওসিকে আমাদের পেছনে ছুটে আসতে হবে। নির্বাচন শুধু জনগণ দিয়ে হয় না, প্রশাসনকে আমাদের কথায় কাজ করতে হবে, মামলা দায়ের করতে হবে, গ্রেপ্তার করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “ওসি সাহেব সকালে আপনার প্রোগ্রাম জানবেন এবং প্রটোকল দেবেন। এবার জামায়াতকে ক্ষমতায় নিতে আল্লাহ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”

শাহাজাহান চৌধুরী প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “ভোট পেতে হলে জনগণের কাছে যেতে হবে, তাদের জন্য কিছু করতে হবে। ভোট পেতে হলে কাঁদতে হবে, চোখের পানি ফেলতে হবে। ভোটারদের মনে মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর প্রতীক থাকা উচিত।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “জামায়াতকে সব আসন উপহার দিয়ে দিলে হবে না, কাজ করতে হবে, দেয়ালে কান ঠেকিয়ে জনগণের পালস বুঝতে হবে। মানুষ জানতে চায় নির্বাচনে জিতলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী হবেন আমীর ডা. শফিকুর রহমান।”

সম্মেলনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রার্থীদের পরামর্শ দিয়েছেন, যাতে অপকর্মকারীদের কার্যক্রম রুখে দেওয়া যায়। এছাড়া ভোটারদের টাকা দিয়ে প্রভাবিত করার চেষ্টা প্রতিরোধের আহ্বান জানানো হয়।

এর আগে শনিবার বিকেলে ডা. শফিকুর রহমান হেলিকপ্টারে চট্টগ্রাম প্যারেড মাঠে অবতরণ করে সাংবাদিকদের বলেন, “নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে হলে নির্বাচনের জেনোসাইড হবে।”

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমীর নজরুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আহসান উল্লাহ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আমীর আনোয়ার আলম চৌধুরী, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আমীর আলাউদ্দিন সিকদার, খাগড়াবাড়ি জেলা আমীর অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল মোমিন প্রমুখ।