দুদককে চাপ প্রয়োগ করলে তালিকা প্রকাশ করে দেবো: দুদক চেয়ারম্যান
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৭:২৫ পিএম, ২৫ নভেম্বর ২০২৫
দুর্নীতির তদন্ত বা অনুসন্ধানকে প্রভাবিত করতে আগামী দিনে কেউ যদি দুদকের ওপর অযাচিত চাপ প্রয়োগ করে, তবে তার পরিচয় প্রকাশ করা হবে- এমন কঠোর সতর্কতা দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দুদকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সেগুনবাগিচায় কমিশনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। সভায় দুদকের কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহ্সান ফরিদ এবং সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীম উপস্থিত ছিলেন।
দুদকের ওপর রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক চাপ আসে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, “যিনি দুর্নীতিগ্রস্ত হন তার উপরেই চাপ বেশি আসে। দুর্নীতিগ্রস্ত না হলে, ঘাড় সোজা থাকলে চাপ কম আসবে। ভবিষ্যতে যারা অন্যায়ভাবে চাপ প্রয়োগ করবে, দুদক তাদের নাম প্রকাশ করবে।"
দুদককে ‘নখ-দন্তহীন বাঘ’ বলা হয় কি না জানতে চাইলে মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, দাঁত-নখ পুরোপুরি তৈরি না হলেও প্রতিষ্ঠানটি এখন মাঝামাঝি অবস্থানে পৌঁছেছে। তবে দেশের সর্বত্র দুর্নীতি প্রতিরোধের দায়িত্ব দুদকের একার নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সিঙ্গাপুরের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, সেখানকার প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত অডিট ব্যবস্থা এত শক্তিশালী যে, দুর্নীতি অনেক আগেই চিহ্নিত হয়ে যায়। যেই দুর্নীতিগুলো অফিসে সমাপ্ত হওয়ার কথা, সেগুলোই দুদকের কাছে আসে। আসার তো কোনো কারণই নাই।
আগামী নির্বাচন সঠিক সময়ে ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন দুদক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, অতীতের মতো এবারও ভোটে কালো টাকার প্রবাহ বাড়তে পারে। তাই দুর্নীতিবাজদের শাস্তি আরও কঠোর করার প্রয়োজন রয়েছে। তার ভাষায়, “আপনি ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করলেন। ১ কোটি দন্ড দিলেন, ৯ কোটি লাভ। তার চেয়ে ১০ কোটি টাকার আত্মসাতের ১০০ কোটি টাকা দন্ড দেওয়া হলে সেটা আর করবে না।”
নির্বাচনের আগে প্রার্থীদের হলফনামা দুদকের কাছে জমা দেওয়ার প্রস্তাব করে তিনি বলেন, এতে সন্দেহভাজন প্রার্থীদের সম্পদ যাচাই করে নির্বাচন কমিশনকে আগেই তথ্য দেওয়া যেত।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা হুইসেল ব্লো করবেন, আমরা আমাদের সামর্থ্যের মধ্যে সেটা পরীক্ষা করবো।”
নির্বাচনের পরও হলফনামা পরীক্ষা অব্যাহত রাখার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “না হওয়ার কোনো কারণ নেই। ১০০ বার করবো।”
উপদেষ্টাদের পিএসদের বিরুদ্ধে চলমান অনুসন্ধান প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান জানান, চারটি ফাইলের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সম্পন্ন হলে সবাই জানবে।