‘জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতার রাজনীতি করে না’

ক্ষমতা নয়, মানুষের অধিকার ও মানবতার সেবাই জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির মূল লক্ষ্য, এমন মন্তব্য করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর। তিনি বলেন, “জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতার রাজনীতি করে না, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার ও মানবতার সেবার রাজনীতি করে।”

গত শুক্রবার, ৩ অক্টোবর রাজধানীর কদমতলীতে তালিমুল কুরআন ইসলামিয়া মাদ্রাসায় আয়োজিত ফ্রি ফ্রাইডে ক্লিনিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আব্দুস সবুর অভিযোগ করেন, জামায়াত অতীতে বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কার্যক্রম চালালেও, সেসব কর্মকাণ্ডকে রাষ্ট্রবিরোধী আখ্যা দিয়ে দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এসব বাধা সত্ত্বেও জামায়াত তাদের সমাজসেবার কার্যক্রম থামায়নি বলে জানান তিনি।

তার ভাষায়, “প্রকাশ্যে সমাজসেবা করার সুযোগ না পেলেও গোপনে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নামে জামায়াতে ইসলামী মানবতার সেবা অব্যাহত রেখেছে। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলেও মানুষের সেবা করবে, না গেলেও করবে।”

তিনি বলেন, ইসলাম মানুষকে এই নীতিতেই পৃথিবীতে পাঠিয়েছে; মানুষ মানুষের জন্য কাজ করবে। কিন্তু মানুষের তৈরি মতবাদে রাষ্ট্র পরিচালিত হওয়ায় স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও সমাজ থেকে বৈষম্য দূর হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

আব্দুস সবুর আরও বলেন, “সমাজের সব মানুষের স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া জন্মগত অধিকার, মৌলিক অধিকার। কিন্তু দেখা যায়, একশ্রেণির মানুষ চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যায়, আরেক শ্রেণির মানুষ সরকারি হাসপাতালে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে থাকে। অনেক সময় দেখা যায়, সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে থেকেও ডাক্তার পাওয়া যায় না। এই যে বৈষম্য, এটির একমাত্র কারণ মানুষের তৈরি মতবাদ। কারণ যেই মানুষ আইন তৈরি করে তিনি ও তার দল সেই আইনের সুবিধাভোগী। সাধারণ মানুষ ওই আইনে শোষিত হয়।”

তিনি ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থার পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেন, সেখানে কোনো ধরনের শ্রেণি-বৈষম্যের জায়গা নেই। ইসলামী কাঠামোয় রাষ্ট্রপ্রধান এবং সাধারণ নাগরিক একই ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকে।

তার ভাষায়, “আল্লাহর আইনে ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় এই বৈষম্যের কোনো সুযোগ নেই। ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপ্রধান যেই যেই সুবিধা রাষ্ট্র থেকে ভোগ করবে একই সুবিধা নাগরিকেরাও ভোগ করবে। দলমত, ধর্ম-বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠীর কোনো বিভেদ, বিভাজন কিংবা বৈষম্য ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় নেই। সবাই রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে সমান সুযোগ সুবিধা, মর্যাদা ও অধিকার লাভ করবে।”

তাই দেশের ভবিষ্যৎ গঠনে জামায়াতের নেতৃত্বে একটি ইসলামী সমাজ গড়ে তোলার জন্য আগামী নির্বাচনে দলটির পাশে থাকার আহ্বান জানান তিনি।

মাদ্রাসার চেয়ারম্যান শাহজাহান খানের সভাপতিত্বে এবং অধ্যক্ষ মাওলানা ঈসমাইল খাঁনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী আব্দুল জাব্বার, নারায়ণগঞ্জ জেলা শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য মজিবুর রহমান মিয়াজী এবং ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুল আলিম।