ঢাকায় ভূমিকম্পে শাহজালাল বিমানবন্দরে ফাটল, যাত্রীরা আতঙ্কিত

ঢাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কিছু স্থাপনায় ফাটল দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে বহির্গমন গেট ৪ ও ৫ সংযোগ স্থানে ফাটল স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা গেছে, যেখানে কিছু সিলিং প্যানেলও খসে পড়েছে।

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের সময় যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে ছুটোছুটি শুরু করেন। সিলিং ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তৎক্ষণাত অংশটি ঘিরে ফেলে এবং সাধারণ যাত্রী চলাচল সাময়িকভাবে সীমিত করে।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এসএম রাগীব সামাদ বলেন, “ডিপারচার ড্রাইভওয়েতে উপরের সিলিং জয়েন্ট থেকে কিছু প্লাস্টার খসে পড়েছে। আলহামদুলিল্লাহ, রানওয়ে, অ্যাপ্রোন এবং টার্মিনালের অভ্যন্তরে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। বিমান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।”

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, গঠনগত সুরক্ষা যাচাই করতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন শুরু করেছেন। তারা ফাটলের প্রকৃতি, গভীরতা এবং ভবিষ্যৎ ঝুঁকি মূল্যায়ন করছেন। বুয়েটের রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় মেরামত বা স্থায়ী সমাধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিন সকালে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির মাত্রা ৫.৭ রিখটার স্কেলে। কম্পন শুরু হয় সকাল ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ডে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা জানান, “ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। সবাইকে অনুরোধ করছি, আতঙ্কিত না হয়ে নিরাপদ স্থানে অবস্থান করুন।” 

আফটার শকের সম্ভাবনা নিয়ে তিনি বলেন, “প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী ছোটোখাটো আফটার শকের সম্ভাবনা থাকতে পারে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এখন পর্যন্ত তেমন সম্ভাবনা দেখা যায়নি।”

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৫ মার্চ ঢাকায় মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল, যার মাত্রা ছিল ৫.৬। তার আগে ২৮ মে ভারতের মণিপুর রাজ্যের মোইরাং শহরের কাছে আরেকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়, যা দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে হালকা কম্পন তৈরি করেছিল।