ড. ইউনূসের সরকার হাসিনার পরামর্শে চলছে: রাশেদ খাঁন
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৪:২৫ পিএম, ১২ আগস্ট ২০২৫
ঝিনাইদহে এক আলোচনা সভায় গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন অভিযোগ করেছেন, চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া, খুনিদের বিচার এবং দেশের বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার আসলে শেখ হাসিনার পরামর্শে পরিচালিত হচ্ছে। তার দাবি, এভাবে চলতে থাকলে দেশ থেকে মুজিববাদ ও ফ্যাসিবাদ কখনোই বিলুপ্ত হবে না।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুরে ঝিনাইদহ শহরের ফ্যামিলি জোন রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে ২০২৪ সালের রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এবং সফল গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কারে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
রাশেদ খাঁন বলেন, “চুনোপুটিদের নয়, খুনি শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, কামাল ও শামীম ওসমানদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির দড়িতে ঝোলাতে হবে। এ নিয়ে জাতি কোনো টালবাহানা সহ্য করবে না। প্রয়োজন হলে আরও ১০টি ট্রাইব্যুনাল বসাতে হবে। টাকা না থাকলে জনগণ টাকা দেবে।”
এসময় এনসিপিকে সরকারের পৃষ্ঠপোষক দল হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, “এটা আমার কথা নয়, টিআইবি প্রধান তাদের কিংস পার্টি বলেছেন। তাছাড়া এনসিপি সমর্থিত দুই উপদেষ্টা পদ নিয়ে দেশ চালাচ্ছেন। তারপরও হাসনাত আবদুল্লাহরা ড. ইউনূস সরকারের সমালোচনা করছেন—তাদেরও ভুল ভাঙতে বসেছে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, যারা হাসিনার মতো স্বৈরশাসককে পরাজিত করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই আজ নানা কলঙ্কে জড়াচ্ছেন এবং চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হচ্ছেন। এতে সমাজে তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।
প্রত্যেক উপদেষ্টার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রাশেদ দাবি করেন, ডিসি নিয়োগ থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রেই দুর্নীতির প্রভাব রয়েছে। ১৬ বছর ধরে বিএনপি-জামায়াতপন্থী তকমা পাওয়া আমলারা এখনও পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
জুলাই সনদে শহীদের সংখ্যা কমিয়ে দেখানোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, “যে সরকার শহীদদের তালিকা করতে পারে না, তাদের কাছ থেকে জাতি কী আশা করবে? জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী নিহতের সংখ্যা ১,৪০০ হলেও জুলাই সনদে তা ১,০০০ করা হয়েছে—এটা কেন ও কীভাবে হলো?”
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য অরাজকতা মোকাবিলায় গণঅভ্যুত্থনের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে থাকার আহ্বান জানিয়ে রাশেদ বলেন, “মাঠে না থাকলে আওয়ামী লীগ মাঠ দখল করে অরাজকতা সৃষ্টি করতে পারে। ইতিমধ্যে তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাই সবাইকে কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকতে হবে।”
১৪ দল ও জাতীয় পার্টিকে “হাসিনার উচ্ছিষ্টভোগী” আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, যে কোনো নামে তাদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত হবে না। একইসঙ্গে ২০১৪, ২০১৯ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী ডিসি, এসপি ও ইউএনওদের বিচার দাবি করেন তিনি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ঝিনাইদহ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন। এতে আরও বক্তব্য দেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল জাহিদ রাজন, যুব অধিকারের সভাপতি রাকিবুল হাসান রকিব, যুবনেতা মো. মিশন আলী, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লা আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক মো. রায়হান হোসেন রিহান, মো. মাহাফুজ রহমান, মো. হালিম পারভেজ ও মো. নাহিদ হাসনান প্রমুখ।