দাফনের ১৭ দিন পর জীবিত উদ্ধার কিশোর রবিউল
- মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৭:২০ পিএম, ২৪ আগস্ট ২০২৫
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় দাফনের ১৭ দিন পর রবিউল ইসলাম নাইম (১৪) নামে এক কিশোরকে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২২ আগস্ট) নবীগঞ্জ উপজেলার সৈয়দপুর এলাকা থেকে তাকে পাওয়া যায়।
পুলিশ জানায়, রবিউল সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার এলাকার গদিয়াচর গ্রামের কনাই মিয়ার ছেলে। নিখোঁজের পর পরিবার ভেবেছিল, কুলাউড়ার একটি ডোবা থেকে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত লাশই রবিউলের। সেই ধারণায় লাশটি শনাক্ত করে ৫ আগস্ট দাফনও করেন তার বাবা-মা ও স্বজনরা।
কুলাউড়া থানা পুলিশ জানান, উদ্ধারকৃত রবিউলকে হেফাজতে নেওয়ার পর শনিবার (২৩ আগস্ট) আদালতে হাজির করা হয়। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার পর আদালত তাকে পরিবারের জিম্মায় ফিরিয়ে দেন। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের জন্ম দিয়েছে।
এর আগে, ২৬ জুলাই সিলেটের ওসমানীনগরের ব্রাহ্মণগ্রাম এলাকায় একটি রেস্টুরেন্ট থেকে নিখোঁজ হয় রবিউল। পরে ৩ আগস্ট কুলাউড়ার বরমচাল ইউনিয়নের রেললাইনের পাশে একটি ডোবা থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের গায়ে ছিল লাল টি-শার্ট, নীল জিন্স ও কফি রঙের শার্ট। পোশাকের মিল থাকায় কনাই মিয়া ও পারুল বেগম লাশটিকে তাদের ছেলে রবিউলের বলে শনাক্ত করেন।
পরবর্তীতে রবিউলের পরিবার অভিযোগ করে, রেস্টুরেন্ট মালিক বুলবুল ফকির তাকে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখেছে। মামলা নিতে গড়িমসির অভিযোগে স্বজনরা ৬ আগস্ট সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধও করেন। পরে কুলাউড়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের হলে পুলিশ মালিক বুলবুলকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়।
তদন্ত চলাকালীন এসআই মুস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ শুক্রবার সন্ধ্যায় নবীগঞ্জের সৈয়দপুরে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে রবিউলকে জীবিত উদ্ধার করে। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে রবিউল জানান, রেস্টুরেন্ট মালিকের সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।
কুলাউড়া থানার ওসি মো. ওমর ফারুক বলেন, রবিউল স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিল। জীবিত উদ্ধারের পর আদালতে সে বিষয়টি স্বীকার করেছে।
এদিকে এখনও পর্যন্ত কুলাউড়া থেকে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত কিশোরের প্রকৃত পরিচয় পাওয়া যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, যদি কেউ দাবি করে, তবে ডিএনএ ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী লাশ হস্তান্তর করা হবে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মনে করছে, রবিউল জীবিত উদ্ধার হওয়ায় তার পরিবার কর্তৃক দায়ের করা হত্যা মামলাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিষ্পত্তি হয়ে যাবে।