গাইবান্ধায় আরও ৭ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ শনাক্ত


গাইবান্ধায় আরও ৭ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ শনাক্ত

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। এবার উপজেলার কিশামত গ্রামে নতুন করে সাতজনের শরীরে এ রোগের উপসর্গ ধরা পড়েছে। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ জনে।

শুক্রবার রাতে (৩ অক্টোবর), গাইবান্ধা শহরের রাবেয়া ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা কিশামত গ্রামের সাতজন রোগীর দেহে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ শনাক্ত করেন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মনজুরুল করিম। জানা গেছে, তিনি প্রতি শুক্রবার রংপুর থেকে এসে ওই ক্লিনিকে রোগী দেখেন। সেদিন ২০ থেকে ২৫ জন রোগীর মধ্যে সাতজনের দেহে অ্যানথ্রাক্সের লক্ষণ পাওয়া যায়।

প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ডা. করিম তাদের গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু পরে হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত এমন কাউকে ভর্তি করা হয়নি। তাই নতুন সাতজন আক্রান্তের নাম-পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।

ডা. মনজুরুল করিম বলেন, "অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত গরুর মাংস খেলে সাধারণত এই রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। তবে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসায় এ রোগ সেরে যায়।"

এর আগেও কিশামত গ্রামের আরও চারজনের শরীরে এ রোগের উপসর্গ দেখা গিয়েছিল। স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েকদিন আগে গ্রামে একটি গরুকে জবাই করা হয়, যেটি পরে অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেই জবাইয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন ১১ জন। এর মধ্যে চারজনের দেহে রোগের লক্ষণ দেখা দেয়, যার মধ্যে রয়েছে হাতে ফোসকা, চামড়ায় পচনের মতো দাগ, এবং মুখ, চোখ ও নাকে ক্ষত।

চিকিৎসাধীন ওই চারজন হলেন মোজা মিয়া (৫৬), মোজাফফর মিয়া (৪৫), শফিকুল ইসলাম (৫০) ও মাহবুর রহমান (৫৫)। তারা বর্তমানে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাফিজার রহমান জানান, "গরু কাটাকাটিতে গ্রামের ১১ জন অংশ নেন। দুই-তিন দিন পর তাদের মধ্যে চারজনের শরীরে ফোসকা পড়ে এবং মাংসে পচনের মতো উপসর্গ দেখা দেয়।"

অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ বিভাগ। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন মোজাম্মেল হক জানান, কিশামতসহ আশপাশের ইউনিয়নগুলোতে গবাদিপশুকে অ্যানথ্রাক্সের টিকা দেওয়া হয়েছে।

গাইবান্ধার সিভিল সার্জন ডা. রকিবুজ্জামান বলেন, "অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত ব্যক্তিদের লক্ষণ হচ্ছে চর্মরোগ। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কারও শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। তবে এখন পর্যন্ত গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল বা অন্য কোনো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ধরনের রোগী ভর্তি হয়নি।"

স্থানীয় স্বাস্থ্য ও প্রাণিসম্পদ বিভাগ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং জনসচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×