চট্টগ্রাম ইপিজেডে ভবনটির অগ্নিনিরাপত্তা সনদই ছিল না
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০২:৩৮ পিএম, ১৭ অক্টোবর ২০২৫
চট্টগ্রামের রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) একটি বহুতল ভবনে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য; ভবনটির অগ্নিনিরাপত্তা সনদ ছিল না। এ ছাড়া ন্যূনতম জায়গার অভাবে ভবনের দুই পাশে আগুন নেভানোর কোনও সুযোগ ছিল না, যা আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে এসব তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেনেন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।
তিনি বলেন, "অগ্নিনিরাপত্তা সনদ পেতে আবেদন করা হয়েছে কেবল। তবে নিয়ম অনুযায়ী এখনো পরিদর্শন করা হয়নি। তার আগেই দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় ভবনের দুই পাশ দিয়ে আগুন নেভানোর সুযোগ ছিল না। অন্য দুই পাশ থেকে চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনা হয়েছে।"
গত বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, দুপুর আড়াইটার দিকে ভবনের সপ্তম তলায় আগুনের সূত্রপাত হয়। প্রথমে আগুন সীমিত থাকলেও, দ্রুত তা পুরো আটতলা ভবনজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে আশপাশের কয়েকশো মিটার এলাকা পর্যন্ত তাপ ছড়িয়ে পড়ে।
আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরাও অভিযানে যোগ দেন। তবে প্রচণ্ড উত্তাপের কারণে তাদের প্রচেষ্টা ব্যাহত হয় এবং কিছুক্ষণের জন্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে হালকা বৃষ্টিপাত হলেও আগুনের তীব্রতা কমেনি। বরং দাহ্য পদার্থের কারণে আগুন আরও দীর্ঘস্থায়ী হয়ে পড়ে এবং ভবনের কিছু অংশ ধসে পড়ে।
পরদিন শুক্রবার সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয় বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস। তবে তারা সতর্ক করে দিয়ে বলে, আগুন পুরোপুরি নিভতে আরও সময় লাগবে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সিইপিজেডের ১ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর সড়কে অবস্থিত এই ভবনে দুটি প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম পরিচালনা করছিল, অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড এবং জিহং মেডিকেল কোম্পানি। সাততলায় ছিল তাদের গুদাম, যেখানে অ্যাডামস ক্যাপের তৈরি টাওয়েল ও ক্যাপ এবং জিহং মেডিকেলের সার্জিক্যাল গাউনসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সামগ্রী মজুদ ছিল। সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের একজন কর্মকর্তা শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে জানান, "সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে আমাদের এখনও ১৭ ইউনিট কাজ করে যাচ্ছে। আগুন পুরোপুরি নির্বাপণ করতে সময় লাগবে। আগুনের কারণ সম্পর্কে এখনো জানা যায়নি।"