এনজিওর কিস্তি খেলাপ
শখের বদনা ও আংটি-নাকফুল ফেরত পেলেন শ্রাবণী
- বাগেরহাট প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১০:৫২ এম, ১২ নভেম্বর ২০২৫
বাগেরহাটের চিতলমারীর গৃহবধূ শ্রাবণী হীরার বদনা, নাকফুল ও আংটি ফেরত পেয়েছেন তিনি। এই ঘটনার পর ডাম ফাউন্ডেশন ফর ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (ডিএফইডি) চিতলমারী শাখার ম্যানেজার বাসুদেব দেবনাথ ও মাঠকর্মী নেওয়াজ শরীফকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।
ডিএফইডির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনার যথাযথ তদন্তের নির্দেশ দিয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গৃহবধূ শ্রাবণী হীরা সাংবাদিকদের বলেন, "বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুরুত্ব দিয়ে খবর প্রকাশের পর সকাল ১০টার দিকে ডাম এনজিওর কয়েকজন কর্মকর্তা আমার বাড়িতে এলেন। স্যাররা আমার শিশু কন্যাসহ আমাদের সার্বিক খোঁজখবর নেন। সব কিছু শুনে স্যাররা আমাকে অফিসে নিয়ে আমার শখের দুটি বদনা, নাকফুল ও আংটি এবং ফাঁকা দুটি স্ট্যাম্প ফেরত দিয়েছেন। আমি স্যারদের ব্যবহারে খুশি এবং সাংবাদিকদের কাছে কৃতজ্ঞ।"
ডিএফইডির নরসিংদী জোনাল ম্যানেজার তৌহিদুল ইসলাম জানান, "প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে আমি, বরিশালের জোনাল ম্যানেজার মো. মহসিন হোসাইন এবং বাগেরহাটের এরিয়া ম্যানেজার মো. কবির হোসেন শ্রাবণী হীরার বাড়িতে গিয়েছি। তার বদনা, নাকফুল ও আংটি ফেরত দেওয়া হয়েছে। শ্রাবণী তার সুবিধামতো খেলাপী ঋণ পরিশোধ করবেন। এ ঘটনায় চিতলমারী শাখার ম্যানেজার বাসুদেব দেবনাথ ও মাঠকর্মী নেওয়াজ শরীফকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।"
এছাড়া প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার সাহিদুল কবীর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটিতে সহকারী ব্যবস্থাপক (নিরীক্ষা) মো. মনিরুল ইসলাম আহ্বায়ক, নারায়ণগঞ্জের জোনাল ম্যানেজার মুহাম্মদ খায়রুল ইসলাম ও এমআইএস কো-অর্ডিনেটর মো. আব্দুর রাজ্জাক সদস্য হিসেবে রয়েছেন। তদন্ত কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তৌহিদুল ইসলাম আরও বলেন, "কোনো জোর প্রয়োগ ছাড়াই গৃহবধূ শ্রাবণী হীরা অভাবের কারণে স্বেচ্ছায় কিস্তির টাকার পরিবর্তে বদনা, নাকফুল ও আংটি দিয়েছিলেন। মঙ্গলবার বিকেলে ৯ হাজার ৫০০ টাকা জমা দিয়ে তিনি ওই মালামাল ফেরত নিয়েছেন।"
শ্রাবণী হীরা চিতলমারী শাখা থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। তার স্বামী রিপন রায় কাজের জন্য এলাকাটি ত্যাগ করার পর কয়েকটি কিস্তি খেলাপী হওয়ায় ২৯ অক্টোবর সকাল ১০টায় এনজিও কর্মীরা তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। পরে ফিল্ড কর্মী ও কর্মকর্তারা বিকেলে তার হাতে থাকা আংটি, নাকফুল ও পিতলের বদনা নিয়ে যান এবং দুটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন বলে তিনি অভিযোগ করেছিলেন।