‘তিন লাখ টাকা দিছি তারপরও আমার ছেলেরে মাইরা ট্যাঙ্কির ভেতরে ফালাই রাখছে’


‘তিন লাখ টাকা দিছি তারপরও আমার ছেলেরে মাইরা ট্যাঙ্কির ভেতরে ফালাই রাখছে’

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে দেড় বছর আগে অপহৃত ও হত্যা করা শিশু তাওহীদ ইসলামের মামলায় আদালত আসামি মো. মকবুল হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন।

বুধবার (১২ নভেম্বর) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি আসামিকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা, অপর ধারায় আমৃত্যু কারাদণ্ড ও ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, আসামির স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে জরিমানার টাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে নিহত শিশুর পরিবারকে প্রদান করা হবে।

রায় ঘোষণার সময় শিশুটির মা তাসলিমা আক্তার কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, “আমার ছেলে তাওহীদ ইসলামকে ২০২৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি মকবুল অপহরণ করে। এরপর তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আমি টাকা দিয়েও সন্তানকে ফেরত পাইনি। মকবুল শিশুকে ট্যাংকিতে ফেলে হত্যা করেছে।”

শিশুটির বোন ও নানীও রায়ের সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, তাওহীদ ইসলাম দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার আব্দুল্লাহপুর এলাকার রসুলপুর জামিআ ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার নাজেরা বিভাগে অধ্যয়ন করত। ২০২৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বিকালে মাদ্রাসায় ক্লাস শেষে মামার দোকানে যান। মামাকে না পেয়ে তিনি একাই বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। পথে মকবুল হোসেন শিশুকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করেন। পরের দিন সকাল সাড়ে ১০টায় ভুক্তভোগীর মামা নির্ধারিত মুক্তিপণ পৌঁছে দেন, কিন্তু আসামি শিশুকে ফেরত দেননি। পরে পরিবার র‌্যাবের কাছে অভিযোগ করলে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে মকবুলকে গ্রেফতার করে এবং সেফটিক ট্যাংকি থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়।

মকবুল কেরানীগঞ্জ মডেল থানার লাখিরচর এলাকার বাসিন্দা। মামলার তদন্ত শেষে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক এ কে এম সাইদুজ্জামান ২০২৪ সালের ৩১ জুলাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পেনাল কোড ৩০২/২০১ ধারায় আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় ১৮ জন সাক্ষী দাখিল করেন।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×