গণভোটে যে চার প্রশ্ন থাকবে, যা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় নির্বাচনের দিন দেশব্যাপী গণভোট অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ভোটাররা চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে হ্যাঁ বা না ভোট দিয়ে তাদের মতামত জানাতে পারবেন। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, এই গণভোটের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট যদি ‘হ্যাঁ’ আসে, তবে আগামী সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে। এই পরিষদের সদস্যরা একই সঙ্গে জাতীয় সংসদের কার্যক্রমেও অংশগ্রহণ করবেন এবং তাদের প্রথম অধিবেশন শুরু হওয়ার ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান, জুলাই সনদের আলোকে গণভোটের জন্য চারটি প্রশ্ন নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, ভোটারদের কাছে মূল প্রশ্ন হবে:

আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ সংবিধান সংস্কার বাস্তবায়ন আদেশ ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলোর প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করছেন?

ক. নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।

খ. আগামী সংসদ হবে দুই কক্ষ বিশিষ্ট। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ জন সদস্য বিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধন করতে হলে উচ্চ কক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন দরকার হবে।

গ. সংসদের নারী প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে যে ৩০টি প্রস্তাবে জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলো বাধ্য থাকবে।

ঘ. জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে।

প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, “গণভোটের এই চারটি বিষয়ের উপর একটি মাত্র প্রশ্নে আপনি ‘হ্যাঁ বা না’ ভোট দিয়ে আপনার মতামত জানাবেন। গণভোটের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট হ্যাঁ সূচক হলে আগামী সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে।”