অপারেশন ডেভিল হান্ট অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বৈরশাসকে পরিণত করবে: গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য


অপারেশন ডেভিল হান্ট অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বৈরশাসকে পরিণত করবে: গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য

গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের জরুরী সভা মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির মহানগর কার্যলয় কাঁটাবনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক ও সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সামছুল আলমের সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (এমএল) সভাপতি কমরেড হারুন চৌধুরী, সোস্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ ও প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) মহাসচিব হারুন আল রশিদ খান।

সভায় বক্তারা বলেন, ‘দীর্ঘ ছয় মাস পার হওয়ার পরেও অন্তর্বর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ দৃশ্যমান কোন পরিবর্তন করতে পারে নাই। খুন, গুম, ছিনতাই, রাহাজানি ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড আগের মতোই আছে। অধিকন্তু আইন হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। স্বৈরাচারের নাম নিশানা মুছে ফেলার নামে মবক্রেসী স্থাপনা বাসাবাড়িতে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ভয়ংকর আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে বহু বার বিভিন্ন নামে সন্ত্রাস দমনে বাহিনী গঠন করে। সেইসব বাহিনী সন্ত্রাস দমন না করে ভিন্নমত দমন পীড়ন শুরু করে। বিচারবহির্ভূত হত্যা সেখান থেকেই স্বাধীন বাংলাদেশে শুরু, সেই ধারা আজও অব্যাহত। 

তারা আরো বলেন, ‘এক রক্ষীবাহিনীর অত্যচাার নির্যাতন-নিপীড়ন আজও মানুষ ভুলে নাই। বিপুল জনপ্রিয় শেখ মুজিবকে স্বৈরশাসকে পরিণত করে। জিয়া-এরশাদের সামরিক শাসন পরবর্তী খালেদা জিয়ার আমলে ‘অপারেশন ক্লিন হার্ট’ ৪০ জনের অধিক নাগরিক বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়। বাস্তবে আইনশৃঙ্খলার কোন উন্নতি হয় নাই। বরং সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করে, দেশের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। তড়িঘড়ি করে ইনডেমনিটি দিয়ে অপারেশন ক্লিন হার্ট বন্ধ করতে হয়। পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা নিজে ভারতে নিরাপদ স্থান থেকে উসকে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। এর জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে হবে, যে কোন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে। গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে। ভারতে বসে শেখ হাসিনার অপতৎপরতা বন্ধ করতে দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে হবে।’

নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘ধানমন্ডি-৩২সহ সারাদেশে স্বৈরাচারের দোসরদের বাড়িঘর ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান কার্যালয় বুলডোজার দিয়ে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এখনো শিক্ষার্থী ও বিক্ষুব্ধ জনগণ রাষ্ট্রের আস্কারা ছাড়া করতে পারে না। এতে দেশের ভাবমূর্তি ব্যপক ক্ষতি হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায় এড়াতে পারে না। সরকার চাইলেই আইন করে রাষ্ট্রের মালিকানায় স্বৈরাচার ও স্বৈরাচারের দোসরের সম্পত্তি জব্দ করে বিতর্ক এড়াতে পারতো। এসব দেখে মনে হয় সমন্বয়ের অভাবে সরকারের ভিতর অনেকগুলো সরকার কাজ করছে। এই সুযোগে অনেক অপশক্তি তাদের ইচ্ছার বাস্তবায়ন ঘটাচ্ছে।’

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ‘ভেঙ্গে পরা আইনশৃংখলা স্বাভাবিক করার জন্য সম্মিলিত প্রয়াস নেওয়া জরুরী। সেনাবাহিনীর মেজিস্ট্রেসি ক্ষমতা থাকার পর ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামে নতুন অভিযান অতীতের অভিজ্ঞতা ভালো না। এতে বিতর্কিত ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটলে দায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপর বর্তাবে। দমন পীড়ন বেড়ে গেলে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পাবে। নানা অজুহাতে কালক্ষেপণ করায় পতিত স্বৈরাচারের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে, তাদের জুলাই গণহত্যা দুর্নীতি ও অর্থপাচারের বিচার যেনো অপ্রাসঙ্গিক হয়ে না যায়। দেশ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে, নির্বাচনী সংস্কার দ্রুত শেষ করে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে অবাধ সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করে দেশকে গভীর সংকট থেকে রক্ষা করতে আবার ঐক্যবদ্ধ হন।’

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×