বাংলাদেশকে নিয়ে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে: হাফিজ উদ্দিন
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৬:৩৪ পিএম, ২৮ আগস্ট ২০২৫
বাংলাদেশকে লক্ষ্য করে ‘আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, “এই সময় মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মকে সজাগ হতে হবে। অনেকে বৃদ্ধ হয়েছেন, দাড়ি, টুপি পরেছেন কিন্তু ট্রেনিং তো জমা দেননি।”
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসকাবলে অনুষ্ঠিত জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় মুক্তিযোদ্ধারা আমৃত্যু আপসহীন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব মন্তব্য করেন।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “বিএনপি যদি রাষ্ট্র ক্ষমতায় যায় তাহলে এই পুরো জাতিকে মুক্তিযোদ্ধার জাতিতে পরিণত করব। আমরা ছাত্রদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেব, যাতে কোনো প্রতিবেশী রাষ্ট্র কিংবা অন্য কেউ বাংলাদেশের দিকে রক্তচক্ষু দেখাতে না পারে। ৬ কোটি লোকের দেশ মিয়ানমার, ১৮ কোটি লোকের দেশ বাংলাদেশের ওপরে হামলা করতে চায়। ১১ লাখ রোহিঙ্গা আমাদের ওপর তারা চাপিয়ে দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আজকে আমাদের প্রয়োজন ঐক্য। যারা শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি তাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছে। জামায়াত ইসলামীকে এত বছর আশ্রয় দিয়েছি, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, বেগম জিয়া মন্ত্রিসভায় তাদের স্থান দিয়েছিলেন। আজকে তার প্রতিদানে তারা কি বলছে? এজন্য কী এদের মন্ত্রী বানিয়েছিলাম আমরা। তাদের (জামায়াত) ক্ষোভ এজন্য যে, কেন জনগণ বিএনপিকে সমর্থন করে। আমরা ১৬-১৭ বছর সংগ্রাম করেছি। বারবার জেলে গিয়েছি, আমাদের হাজার হাজার কর্মী জীবন দিয়েছে, গুম হয়েছে। আমাদের বহু নেতা হারিয়ে গেছে, সেজন্যই তো আজকে বিএনপির এই জনপ্রিয়তা।”
জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে হাফিজ উদ্দিন বলেন, “এই দলটি শুধু একাত্তর সালে বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছে তাই নয়, তারা ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায়ও বিরোধিতা করেছে। এই দল এখন জনগণের মালিক-মোক্তার হয়ে বসতে চায়। তারা এরই মধ্যে উপলব্ধি করেছে যে, জনগণের মাধ্যমে তাদের সুযোগ নাই, তাদের জনগণ ভোট দেবে না। তাদের একমাত্র চেষ্টা হলো বিএনপি ঠেকাও, বিএনপি যেন রাষ্ট্র ক্ষমতায় না আসতে পারে। সুতরাং নির্বাচন দরকার নাই, নির্বাচনকে বিলম্বিত করার জন্য তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।”
নিজ দলের নেতাকর্মীদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, “আমাদেরও সাবধান হতে হবে, আওয়ামী লীগ যা যা করেছে আমরা বিএনপি কর্মীরা যদি একই কাজ করি তাহলে পরিণতি কিন্তু আওয়ামী লীগের মতো হবে। এটা উপলব্ধি করে আগামী দিনগুলোতে আমাদের পথ চলতে হবে। ইনশাল্লাহ আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব, রাষ্ট্রক্ষমতার লোভে জাতীয়তাবাদকে জলাঞ্জলি দেবেন না।”
সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে হাফিজ উদ্দিন বলেন, “আমরা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাই। সংবিধান যেকোনো সময়ে যেকোনো দল পরিবর্তন করতে পারে। সারা পৃথিবীতে সংবিধান প্রণয়ন করে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশেও এটি হয়ে এসেছে। আগামী দিনেও ইনশাল্লাহ সেটিই হবে। কোনো অনির্বাচিত ব্যক্তির দ্বারা সংবিধান সংশোধন হতে পারে না।”
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত। সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, মজিবুর রহমান সারওয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমানসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।