নির্বাচনের দিন গণভোট হলে আমাদের অনেক সমস্যা হতে পারে: আজহারুল ইসলাম
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৩:৫০ পিএম, ২২ নভেম্বর ২০২৫
রংপুর-২ (বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ) আসনের জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, নির্বাচনের সঙ্গে একযোগে গণভোটের কারণে তাদের জন্য জটিলতা তৈরি হতে পারে। তিনি বলেন, “আমরা মনে করি নির্বাচনের দিন গণভোট হলে আমাদের অনেকগুলো সমস্যায় পড়তে হতে পারে। কারণ আমাদেরকে দুইটা ভোট দিতে হবে। সময় আমাদের অল্প। এতে আমাদের ভোট ঠিকমত কাজ হবে না এবং জাতীয় নির্বাচনটা গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারণে সেখানে অনেকে সমস্যায় পড়তে পারে।”
শনিবার (২২ নভেম্বর) সকালে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
এটিএম আজহারুল ইসলাম আরও বলেন, “গণভোটে সবাই রাজি হয়েছি, তাহলে কেন গণভোট জাতীয় নির্বাচনের আগেই হবে না এবং করলে সমস্যাটা কি? আমাদের দাবি, জাতীয় নির্বাচনের আগেই যেন গণভোট করা হয়।”
তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো সবাই স্বাক্ষর করেছি। আমরা মনে করি, গণভোট হলে অনেক সমস্যার সমাধান হতে পারে। আমাদের হাতে সময় অল্প, এজন্য ভোট এবং গণভোটের সময় হবে না।”
সরকার ও সংশ্লিষ্টদের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে এখনই কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা সব সময় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দাবি করে আসছি। এখনো প্রশাসনে অনেকে আছেন, যারা বিশেষ একটা দলের পক্ষে কাজ করছে। সরকারি চাকরি যারা করেন তারা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। এটা অব্যাহত থাকলে আমার এলাকায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে,ইনশাআল্লাহ।”
বদরগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সাড়ে তিন-চার মাস ধরে ঘুরে তিনি জানান, “সব জায়গায় ভালো সাড়া পাচ্ছি। নারীদের সবচেয়ে বেশি সাড়া পাবো, ইনশাআল্লাহ। অনেক সংস্কার করেছি। যেহেতু আমি জনগণের জন্য নির্যাতিত ছিলাম, এজন্যই তারা আমাকে ভোট দেবে।”
তিনি যোগ করেন, “আমি সর্বস্তরের লোকদের সমর্থন পাচ্ছি। যেহেতু তরুণ প্রজন্ম একটা বিপ্লব করে সরকারকে হঠিয়েছে, এখানে তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণ অনেকটা বেশি। তরুণ-যুব-বৃদ্ধ, মহিলা এবং অমুসলিমদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।”
নির্বাচিত হলে করণীয় কার্যক্রম নিয়ে তিনি বলেন, “সর্বপ্রথম রাস্তাঘাট তৈরি করব। যে সমস্ত রাস্তাঘাট হয়নি প্রশাসনকে বলে করার চেষ্টা করেছি। যে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বৈষম্যের শিকার এবং এমপিভুক্ত করেনি সেগুলোর দিকে লক্ষ্য রাখবো, ইনশাআল্লাহ।”
শ্যামপুর সুগার মিল সম্পর্কেও তিনি বলেন, “মতিউর রহমান নিজামী শিল্পমন্ত্রী থাকা অবস্থায় উন্নয়ন হয়েছিল। কিন্তু এখন সেটি দুর্নীতি ও লোকসানের কারণে বন্ধ করা হয়েছে। নির্বাচিত হলে চেষ্টা করব আইনি কোনো সমস্যা না থাকলে শ্যামপুর চিনিকল চালু করার। যাতে আমার এলাকার শত শত লোকজন চাকরি করতে পারে। এখানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আছে, কিন্তু গরিব লোকজন বেশি। আমি ইতোমধ্যে একটা হাসপাতাল করেছি, যেখানে শত শত লোকজন চাকরি করছে। নির্বাচিত হলে বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জের দুই উপজেলায় দুটি হাসপাতালের আধুনিকায়ন করা হবে। যাতে মানুষ ঠিকমতো সেবা পায়, সেটি নিশ্চিত করার চেষ্টা করব। সুলভমূল্যেও চিকিৎসা দেওয়া হবে।”
দুর্নীতিমুক্ত থাকার অঙ্গীকারে তিনি বলেন, “যেহেতু দুর্নীতিমুক্ত থেকেই এতোদিন কাজ করছি, এখানে নির্বাচিত হলে দুর্নীতিমুক্ত থাকবো, ইনশাআল্লাহ। আমি সব জায়গায় বলেছি, যদি এমপি হতে পারি সরকারি-বেসরকারি বরাদ্দ আনবো। ক্ষমতায় গেলে সরকারি বরাদ্দের একটি হারামের টাকাও আমার পেটে ঢুকবে না, ইনশাআল্লাহ।”
বিজয়ের বিষয়ে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “আমার বিজয় এমনভাবে হবে, আমার ধারেকাছেও কেউ আসতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ।”
শোভাযাত্রার শুরু হয় ৪ হাজার মোটরসাইকেল নিয়ে সাহাপুর মাঠ থেকে। এরপর বদরগঞ্জের সাব্বিরিজ হয়ে শ্যামপুর, নাগের হাট পদাগঞ্জ, লোয়ানী পাড়া, ওসমানপুর, ট্যাক্সেরহাট, গোপীনাথপুরের বটেরহাট, লালদীঘি ধোলাইঘাট, তারাগঞ্জ, একরচালি হাড়িয়ালকুটি হয়ে শেখেরহাট হয়ে আবার সাহাপুর মাঠে শেষ হয়।