বাংলাদেশ স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা


বাংলাদেশ স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

বৈশ্বিক শক্তির পরিবর্তনশীল প্রেক্ষাপটে পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নিজস্ব পথ অনুসরণ করবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশ বিশ্বে যুক্ত হবে একটি আত্মবিশ্বাসী, সার্বভৌম ও দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে।”

শনিবার ঢাকায় সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত “বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন ২০২৫”-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে একথা বলেন তিনি। 

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “ভূরাজনৈতিক পুনর্গঠনের কারণে অনেক দেশ প্রতিযোগী শক্তি-ব্লকের সঙ্গে নিজেকে সংযুক্ত করতে বাধ্য হয়, কিন্তু বাংলাদেশের পথচলা নির্ধারিত হবে জাতীয় স্বার্থ ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ভিত্তিতে।”

তিনি বলেন, “ইউক্রেন, গাজা, সুদান ও মিয়ানমারে চলমান সংঘাত বৈশ্বিক সংকট ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা উন্মোচন করেছে, যা আরও কার্যকর বহুপাক্ষিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তাকে সামনে এনেছে।”

বে অব বেঙ্গলের ক্রমবর্ধমান কৌশলগত গুরুত্ব উল্লেখ করে তৌহিদ হোসেন বলেন, “বাংলাদেশ এই অঞ্চলে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে চায়। অংশীদারিত্বে যেন বাস্তব ফল আসে এবং দেশের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষিত থাকে; এটাই হবে মূল লক্ষ্য। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কেবল ভৌগোলিক সংযোগ হিসেবে নিষ্ক্রিয় থাকতে চায় না; দেশটি আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে একটি দৃঢ় ও প্রভাবশালী ভূমিকা রাখতে আগ্রহী।”

মানবিক দায়বদ্ধতার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রতি বাংলাদেশের চলমান সহায়তা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দীর্ঘদিনের অবদান দেশের নৈতিক অবস্থানকে শক্তিশালী করে।”

তথ্য নিরাপত্তা নিয়ে তিনি সতর্ক করে বলেন, “এআই-নির্ভর বিকৃতি, ডিপফেক ও ভুয়া তথ্য কূটনীতি ও জনআলোচনাকে নতুনভাবে প্রভাবিত করছে। বাংলাদেশ তার তথ্যভিত্তিক কাঠামোকে সুরক্ষিত করতে চায় এবং একই সঙ্গে এমন নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থাকে সমর্থন করবে, যা অধিকার ও নিরাপত্তার মধ্যে সুষম ভারসাম্য রক্ষা করে।”

সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহতি, নিষেধাজ্ঞা এবং বৈশ্বিক ডি-রিস্কিংয়ের কারণে উদ্ভূত অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ক্ষেত্রে তিনি বলেন, “বাংলাদেশকে আঞ্চলিক সম্পর্ক আরও বৈচিত্র্যময় ও শক্তিশালী করতে হবে। বে অব বেঙ্গল অঞ্চলের সংযোগ, প্রযুক্তি বিনিময় এবং স্থিতিশীল অংশীদারিত্ব ভবিষ্যতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।”

তিনি সিজিএস-কে সম্মেলন আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “অনিশ্চিত বৈশ্বিক পরিবেশে উন্মুক্ত আলোচনার এমন উদ্যোগ অত্যন্ত সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয়।”

এ বছরের সম্মেলনে আলোচিত হচ্ছে বৈশ্বিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা, জোট পরিবর্তন, তথ্য যুদ্ধ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন, অর্থনৈতিক চাপ এবং সমসাময়িক বিশ্বের অভিবাসন প্রবণতা।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×