‘অন্তর্বর্তী সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে তাদের দুর্বলতা তত দৃশ্যমান হবে’


‘অন্তর্বর্তী সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে তাদের দুর্বলতা তত দৃশ্যমান হবে’

অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান যত দীর্ঘ হবে, তাদের দুর্বলতাও তত বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠবে এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার দাবি, এই দুর্বলতা যত প্রকট হবে, ততই জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানকে ঘিরে বিভ্রান্তির সুযোগ সৃষ্টি হবে।

রোববার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

নুরুল হক নুরের ওপর হামলাসহ সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তারেক রহমান বলেন, দেশের স্থিতিশীলতা হয় ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে, নয়তো ইচ্ছাকৃতভাবে জটিল করে তোলা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের অভিপ্রায়ের সরকার। তবে এই সরকারের কাছে রাজনৈতিক একটি দক্ষ এবং জবাবদিহিমূলক সরকারের মতো ভূমিকা আশা করার কোনো যৌক্তিক কারণ আছে বলে মনে করি না।”

আগামী নির্বাচনকে ঘিরে নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তারেক রহমান বলেন, “এক বছর আগে বলেছিলাম, আগামী নির্বাচন ঘিরে অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে। সাম্প্রতিক সেই অশুভ শক্তির অপতৎপরতা ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে।”

তিনি প্রশ্ন তোলেন, নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না এ ধরনের উচ্চারণ ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির ঐক্যকে দুর্বল করবে নাকি পলাতক ফ্যাসিবাদী শক্তির পুনরুত্থানের প্রাসঙ্গিকতা তৈরি করবে? এখনো সময় আছে, আমাদের সতর্ক হওয়া দরকার। পরাজিত পলাতক শক্তি কিন্তু সুযোগের অপেক্ষায় ওত পেতে রয়েছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনের পথই উত্তম সমাধান বলে মত দেন তিনি। তারেক রহমান বলেন, “রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য শর্ত শিথিল করে নির্বাচনের পথে হাঁটাই এখন সময়ের দাবি।” তবে তিনি অভিযোগ করেন, কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচনের পরিবর্তে দলীয় স্বার্থ রক্ষায় নানা শর্ত আরোপ করে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করছে।

তাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “সংস্কারের প্রয়োজন অবশ্যই রয়েছে। তবে জনগণের অধিকার চর্চার পথে বাধা সৃষ্টি করে কোনো সংস্কারকেই টেকসই করা যাবে না। পলাতক স্বৈরাচারের মতন বিএনপির বিজয় ঠেকানোর অপরাজনীতির পরিবর্তে আসুন, আগে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের দায়বদ্ধ সরকার গঠন করি সকলে মিলে।”

আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘোষণা দেন, বিএনপি সরকার গঠন করলে প্রধানমন্ত্রী হবেন তারেক রহমান। তার ভাষায়, “বিএনপিই একমাত্র দল, যারা বাংলাদেশকে রক্ষা করতে পারে।”

তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে এবং ডিসেম্বর মাসে তফসিল প্রকাশ করবে। তবে তার অভিযোগ, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে বানচালের চেষ্টা চলছে। “বিএনপি কোনো ধরনের হুমকিকে ভয় পায় না,” যোগ করেন তিনি।

দলের প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলসহ নেতারা বক্তব্য রাখেন।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×