পরিকল্পিতভাবে ইউনূস সরকার বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের দিকে ঠেলে দিচ্ছে: সিপিবি


পরিকল্পিতভাবে ইউনূস সরকার বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের দিকে ঠেলে দিচ্ছে: সিপিবি

রাজনীতিতে ক্রমবর্ধমান অস্থিরতা ও উগ্র ডানপন্থার পুনরুত্থান মোকাবিলায় আগামী দিনে বামপন্থী ও গণতান্ত্রিক শক্তির সমন্বয়ে সরকার গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিকেলে অনুষ্ঠিত সিপিবির জাতীয় সমাবেশে্র বক্তব্যে নেতারা এসব কথা বলেন।

সিপিবি দাবি করে, দেশ এখন এক সর্বগ্রাসী সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যে মুক্তিযুদ্ধে রক্ত ঝরানো হয়েছিল, তা পাকিস্তানের শাসন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য, ভারত কিংবা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নতুন শৃঙ্খলে আবদ্ধ হওয়ার জন্য নয়।

সিপিবি নেতারা অভিযোগ করেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন ইউনূস সরকার পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের ভূরাজনৈতিক স্বার্থের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন সিপিবি সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন। বক্তব্য রাখেন দলের সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বাসদ প্রধান উপদেষ্টা খালেকুজ্জামান, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, সিপিবির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা। উপস্থিত ছিলেন ডা. দিবালোক সিংহ, শাহ সূফী হাসান শাহ সুরেশ্বরী দিপু নূরী, আদিবাসী নেত্রী রেবেকা সরেন এবং বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদের সাবেক সভাপতি কৃষ্ণলাল।

সমাবেশে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, জাতীয় নির্বাচনের দিন ড. ইউনূস যে ‘গণভোটের’ প্রস্তাব দিয়েছেন তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তারা ঐকমত্যের কথা বলে একটি ভুয়া দলিল রচনা করেছে। সাংবিধানিক আদেশ বলবৎ করে সরকার যা করতে যাচ্ছে গণভোটের মধ্য দিয়ে তার বৈধতা হবে না।

তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষ অতীতে রক্ত দিয়ে স্বৈরাচারকে পরাজিত করেছে, তাই নতুন কোনো ফ্যাসিবাদী বা কর্তৃত্ববাদী শাসন জনগণ মেনে নেবে না। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা উদ্বেগ তৈরি করছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সমাজ পরিবর্তনের শক্তিকে এক মঞ্চে আনার সময় এখনই। যারা সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ব্যক্তিমালিকানার অবসান চান, তাদের নেতৃত্বে একটি যুক্তফ্রন্ট গঠন করতে হবে। এবারের যুক্তফ্রন্ট হবে বিপ্লবীদের যুক্তফ্রন্ট, সমস্ত বামপন্থীদের ফ্রন্ট।

সমাবেশের সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন নির্বাচনে জামানত কমানো ও সব প্রার্থীর সমান সুযোগ নিশ্চিত করার দাবিতে ২৪ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেন। একই দিনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচির কথাও জানান।

এ ছাড়া লালদিয়া টার্মিনাল বিদেশিদের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ১৬ নভেম্বর সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল আয়োজনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

২৮ নভেম্বর ঢাকায় নারীদের রাজনৈতিক কনভেনশন এবং ২৯ নভেম্বর বাম গণতান্ত্রিক জোট, বাংলাদেশ জাসদসহ প্রগতিশীল রাজনৈতিক শক্তির উদ্যোগে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের লক্ষ্যে জাতীয় কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×