শেখ হাসিনাকে ঘিরে নতুন করে ঢাকা-নয়াদিল্লির কূটনৈতিক উত্তেজনা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৭:৪৩ পিএম, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
ভারতে পালিয়ে থাকা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। এই পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ সরকার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বুধবার (১২ নভেম্বর) ভারতের উপ-হাইকমিশনার পবন ভাদেকে ডেকে অনুরোধ জানিয়েছেন, এ ধরনের সাক্ষাৎকার বন্ধ করতে।
কিন্তু কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের পক্ষ থেকে এমন কোনো অনুরোধ মানা প্রয়োজনীয় নয়। কারণ ভারতের গণমাধ্যম স্বাধীন, এবং তারা নির্ধারণ করে যে কার সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে বা সম্প্রচার করা হবে।
সাবেক রাষ্ট্রদূত এম শফিউল্লাহ বলেন, “শেখ হাসিনা নিরাপত্তাবেষ্টিত পরিবেশে রয়েছেন। কোনো গণমাধ্যম সরাসরি তাদের অনুমতি ছাড়া সেখানে যেতে পারে না। তবে ভারতের শীর্ষ তিনটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত তার লিখিত সাক্ষাৎকার ভারতীয় উদ্যোগেই হয়েছে।”
গত কয়েক সপ্তাহে রয়টার্স, এএফপি, বিবিসি ও নিউজ১৮ সহ ভারতের কিছু মিডিয়ায় তার সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের উদ্বেগের মূল কারণ হলো, বিচারাধীন এক পলাতক ব্যক্তিকে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া। বৈঠকে বাংলাদেশি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এটি দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
শফিউল্লাহ মনে করেন, ভারত সরকারের সক্রিয় সহায়তা ছাড়া শেখ হাসিনার এই ধারাবাহিক সাক্ষাৎকার সম্ভব নয়। তার ভাষ্য, “মানবতাবিরোধী মামলার মুখোমুখি থাকা শেখ হাসিনার সম্প্রচার ভারতের নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক স্ট্রাটেজির অংশ।”
তিনি আরও বলেন, “জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ভারতের তৎপরতা বাড়ছে, এবং শেখ হাসিনার এই প্রচারণা দুই দেশের সম্পর্কেও নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।”
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া উচিত এবং ভারতকে উচিত দেশটির আইনের স্বার্থে শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর জন্য দৃঢ় অবস্থান নেওয়া। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে এবং দুই দেশের মধ্যে আস্থা ও স্বচ্ছতার পরিবেশ গড়ে তুলতে এ পদক্ষেপ অপরিহার্য।
বাংলাদেশ-ভারতের কূটনৈতিক মহলে এই ঘটনা নতুন আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, যেখানে প্রশ্ন উঠছে, নিরাপত্তাবেষ্টিত অবস্থায় থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী কীভাবে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার মাধ্যমে বক্তব্য দিতে পারছেন এবং এর প্রভাব কী হবে দুই দেশের সম্পর্কের উপর।