মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে গৃহকর্মী বের হন স্কুল ড্রেসে
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৪:৫১ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি বাসা থেকে মা ও মেয়ের মরদেহ উদ্ধারকে ঘিরে পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোক আর আতঙ্ক। সোমবার দুপুরে দুইজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া গেলে বিষয়টি দ্রুতই এক রহস্যজনক মোড় নেয়, আর তদন্তের কেন্দ্রে চলে আসেন গৃহকর্মী আয়েশা।
পুলিশ জানায়, সোমবার ৮ ডিসেম্বর দুপুর ১২টার দিকে লায়লা আফরোজ ৪৮ এবং তার মেয়ে নাফিজা লাওয়াল বিনতে আজিজ ১৫ এর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের দাবি, মাত্র চার দিন আগে কাজে নেওয়া গৃহকর্মী আয়েশাই এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তাকে খুঁজতে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ, পাশাপাশি সিসিটিভি ফুটেজও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
ফুটেজে দেখা যায়, সোমবার সকাল ৭টা ৫২ মিনিটে বাসায় প্রবেশ করেন আয়েশা। তখন তিনি কালো বোরকা পরিহিত ছিলেন। একই সিসিটিভিতে দেখা যায়, সকাল ৯টা ৩৬ মিনিটে তিনি বেরিয়ে যাচ্ছেন স্কুল ড্রেস পরে।
লায়লা আফরোজ ও তার নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে নাফিজা ওই বাসায় থাকতেন। নাফিজা পড়ত মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলে। সোমবার ছিল তার শেষ বার্ষিক পরীক্ষা।
নিহতের স্বামী আজিজুল জানান, “আজ ১১টার পরে দিকে বাসায় ঢুকে তিনি স্ত্রী ও মেয়ের রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান।” তিনি বলেন, বাসার মেঝে ও দেয়ালের বিভিন্ন স্থানে রক্ত ছড়ানো ছিল।
খবর পেয়ে ওই বাসায় দ্রুত ছুটে যান স্বজন ও প্রতিবেশীরা। তারা বলেন, নাফিজা শান্ত স্বভাবের মেয়ে ছিল এবং নিয়মিত পড়াশোনা করত। তারা অভিযোগের দ্রুত তদন্ত এবং দায়ীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
তেজগাঁও জোনের ডিসি ইবনে মিজান বলেন, “পুলিশ আসার আগেই নাফিজাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই তাকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।” পরে লায়লা আফরোজের মরদেহ পুলিশ নিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, সিসিটিভির ফুটেজ খুঁটিয়ে দেখে অপরাধীদের শনাক্ত করা হবে। ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, আয়েশাকে মাত্র চার দিন আগে কাজের জন্য রাখা হয়। তিনি বিহারী ক্যাম্পে থাকেন, আর তার সম্পর্কে পরিবারের কাছে তেমন কোনো তথ্যও ছিল না।