নিজনামে নিবন্ধিত মোবাইল সিম কার্ড পাচ্ছে রোহিঙ্গারা
- কক্সবাজার প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১২:৩৬ পিএম, ১১ নভেম্বর ২০২৫
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি রোহিঙ্গা শিবিরে বসবাসরত শরণার্থীরা এবার নিজেদের নামেই বৈধ মোবাইল সিম ব্যবহার করতে পারবে। আগে তারা অন্য কারও নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করলেও এখন সরকার প্রাথমিকভাবে ১০ হাজার রোহিঙ্গাকে বৈধ সিম বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম দিনে ইউনাইটেড কাউন্সিল অব রোহাং (ইউসিআরের) নির্বাচিত সভাপতি ও নির্বাহী কমিটির সদস্যদের হাতে সিম কার্ড তুলে দিয়ে কার্যক্রমের সূচনা করেন শরণার্থী কমিশনার।
মিজানুর রহমান বলেন, "রোহিঙ্গাদের ব্যবহৃত সব অবৈধ সিম কার্ড দ্রুত ব্লক করে দেয়া হবে। কেবল বৈধ সিম ব্যবহারের সুযোগ থাকবে। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত হবে এবং অবৈধ সিম ব্যবহার করে সংঘটিত অপরাধ কার্যক্রম বন্ধ করা সম্ভব হবে।"
আরআরআরসি জানান, দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরের সিম অবৈধভাবে ব্যবহার করছিলেন, যা নিরাপত্তার দিক থেকে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছিল। এ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সরকার চলতি বছরের আগস্টে রোহিঙ্গাদের বৈধ সিম ব্যবহারের সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং চারটি মোবাইল অপারেটরের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনার পর এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সাধারণ সিম বিক্রির নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় পরিচয়পত্র ও বায়োমেট্রিক তথ্যের প্রয়োজন হয়। যেহেতু রোহিঙ্গাদের কাছে এই ধরনের পরিচয়পত্র নেই, তাই বিকল্প পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে।
আরআরআরসি বলেন, "রোহিঙ্গাদের জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইচসিআর) প্রদত্ত নিবন্ধন নম্বর বা ‘প্রোগ্রেস আইডি’-এর ভিত্তিতে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সীদের সিম প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ জন্য মোবাইল অপারেটররা পৃথক নম্বর সিরিজ নির্ধারণ করেছে।"
ইউএনএইচসিআরের রোহিঙ্গা ডেটাবেজ বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) ডেটা সেন্টারে সংরক্ষণ করা হবে। পরবর্তী ধাপে এই তথ্য সরকারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ে হস্তান্তর করার পর প্রথম পর্যায়ে ১০ হাজার সিম বিতরণ করা হচ্ছে।
রোহিঙ্গা নেতারা জানান, "নিজদেশে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় পেয়েছি। প্রয়োজনের তাগিদে মোবাইল ব্যবহার করা হচ্ছে। কারনামে নিবন্ধিত সিম আমরা ব্যবহার করি জানি না। কিন্তু এখানেও আমাদের কিছু জাতভাই অপরাধে জড়িয়ে যাওয়ায় পুরো জাতির উপর দোষ চলে আসে। আমাদের নামে নিবন্ধন করা সিম প্রদানে প্রশাসনের চলমান উদ্যোগ আমাদের দুর্নাম গোছাবে বলে মনে করছি।"