গোপালগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক
- গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৯:৫০ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
গোপালগঞ্জে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ঘিরে নানা তৎপরতার চেষ্টা থাকলেও বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। জেলার পাঁচ উপজেলা প্রশাসন কড়াকড়ি নজরদারিতে রাখে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও সতর্ক অবস্থানে ছিল। বিশেষ করে টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় নিরাপত্তা জোরদার ছিল। শহরের সড়কে যানবাহনের চলাচল কিছুটা কম থাকলেও জনজীবন মোটামুটি স্বাভাবিক ছিল।
সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত জেলার বাস কাউন্টারে দূরপাল্লার কোনো বাস ছাড়েনি। বিকাল ৪টার দিকে হাতে গোনা কয়েকটি বাস রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানের উদ্দেশে রওনা হয়। শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিল এবং মানুষের সমাগমও তেমন চোখে পড়েনি।
শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় পুলিশ সাঁজোয়া যান নিয়ে টহল দিচ্ছিলেন এবং শহরের প্রবেশপথে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। বিভিন্ন বাস কাউন্টারে যাত্রী সংখ্যা আগের দিনের তুলনায় কম ছিল।
এর আগে ১০ নভেম্বর থেকে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা মসজিদের ইমাম, ইউপি চেয়ারম্যান, গণমাধ্যমকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান জানান।
তবে, বুধবার (১২ নভেম্বর) রাত সাড়ে ২টা থেকে গভীর রাতে শহরে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন সহিংস ঘটনা ঘটেছে। শহরের গণপূর্ত ভবনের সামনে একটি পিকআপে আগুন দেওয়া হয় এবং পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করা হয়। এছাড়া সদর উপজেলার উলপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের শাখায় পেট্রোলবোমা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
গণপূর্ত বিভাগের কর্মচারী নাসির উদ্দিন বলেন, “রাত সাড়ে ৪টার দিকে নৈশপ্রহরীর চিৎকারে বের হয়ে দেখি পিকআপে আগুন জ্বলছে। আশপাশের লোকজন পানি ও বালু দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দুর্বৃত্তরা পেপসির বোতলে পেট্রোল ভরে নিক্ষেপ করেছে। একটি বোতল অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেছে।”
এছাড়া, ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ও গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কের কয়েকটি স্থানে গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করা হয়। রাত ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছ সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন।
গ্রামীণ ব্যাংকের উলপুর শাখায় পেট্রোলবোমা নিক্ষেপের ঘটনায় তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ব্যাংকের ফিল্ড অফিসার নাগর আলী জানান, “নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি দুর্বৃত্তদের ধাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের দিকে আরও কয়েকটি পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করা হয়। ভবনের হল ছাদে আগুন ধরে যায়, তবে কোনো বড় ক্ষতি হয়নি।”
সর্বশেষ, গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম জানান, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা সক্রিয় ছিলাম। মানুষের সহযোগিতায় জেলার বিভিন্ন এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে।”