ভূমিকম্প পরিমাপে দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র সিসমোগ্রাফ ১৫ বছর ধরে অচল


ভূমিকম্প পরিমাপে দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র সিসমোগ্রাফ ১৫ বছর ধরে অচল

দক্ষিণাঞ্চলে ভূমিকম্প পরিমাপের একমাত্র স্থায়ী সিসমোগ্রাফটি ১৫ বছর ধরে অচল পড়ে আছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি)। প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে ২০১০ সালে স্থাপিত এ যন্ত্রটি দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকায় সাম্প্রতিক ভূমিকম্পসহ কোনো কম্পনের মাত্রা রেকর্ড করা যাচ্ছে না। এতে উপকূলীয় অঞ্চলের চার কোটিরও বেশি মানুষ অজ্ঞাত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগ এবং দেশের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে পবিপ্রবি ক্যাম্পাসে এ সিসমোগ্রাফ স্থাপন করা হয়। স্থাপনের প্রথম বছর দুইটি ভূমিকম্প রেকর্ড হলেও, ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকেই যন্ত্রে ত্রুটি দেখা দেয়। পরবর্তীতে ইন্টারনেট সংযোগ পরিবর্তন করে আবার চালুর চেষ্টা করা হলেও এক বছরের মধ্যেই এটি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায় এবং এরপর আর কখনো সচল হয়নি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভূমিকম্পের প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি ওয়েভ অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং সার্ফেস ওয়েভের আগে কয়েক সেকেন্ডের সতর্ক সংকেত পাওয়া যায়। কার্যকর সিসমোগ্রাফ থাকলে এই সতর্কবার্তা জনগণকে আগেভাগে সরে যেতে সহায়তা করতে পারে যা প্রাণহানি কমানোর বড় উপায়। এছাড়া যন্ত্রের নিচে স্থাপিত প্লেটের মাধ্যমে ভূমির উচ্চতা বৃদ্ধি বা নিম্নগমন পর্যবেক্ষণ করাও সম্ভব ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন যন্ত্রটি অচল থাকায় দক্ষিণাঞ্চলের ভূ-প্রকৃতির ঝুঁকি, টেকটনিক গতিবিধি ও সম্ভাব্য ভূকম্পন সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।

পবিপ্রবির বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. এস এম তাওহীদুল ইসলাম বলেন, ‘যন্ত্রটি বেশ পুরোনো এবং অ্যানালগ প্রযুক্তির। এখন বিশ্বজুড়েই ডিজিটাল সিসমোগ্রাফ ব্যবহৃত হচ্ছে। এ পুরোনো যন্ত্র কতটা কার্যকর ছিল তা প্রকল্প কর্তৃপক্ষই ভালো জানে।’

পবিপ্রবির উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম জানান, ‘যন্ত্রটি বহু বছর ধরেই সম্পূর্ণ অকেজো। পরীক্ষায় দেখা গেছে এটি আর সচল করা সম্ভব নয়। আমাদের ইএসডিএম বিভাগের মাধ্যমে নতুন একটি আধুনিক সিসমোগ্রাফ স্থাপনের প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে। অনুমোদন পেলেই নতুন যন্ত্র স্থাপনের কাজ শুরু হবে।’

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×