শেখ হাসিনাসহ পলাতকদের পক্ষে লড়বেন জেড আই খান পান্না
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১২:৫৮ পিএম, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আগামী ৩ ডিসেম্বর গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তারেক সিদ্দিকীসহ মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি করবে। একই সঙ্গে, পলাতক আসামিদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে স্টেট ডিফেন্স হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৩ নভেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এই দিন ধার্য করেন।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় টিএফআই-জেআইসি সেলে গুম-নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের হওয়া দুই মামলার ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে। এই দুই মামলায় মোট ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে, যার মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামও রয়েছে।
ট্রাইব্যুনালে হাজির করা সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে আছেন র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।
সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার দিনে সকাল থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে ছিল। ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ ঘিরে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন এবং দায়িত্বরতরা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি জানিয়েছেন।
প্রথমে ২০ নভেম্বর শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও প্রসিকিউশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে তা পরবর্তীতে নির্ধারণ করা হয়। ২৬ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের প্যানেল এ সিদ্ধান্ত দেন।
এর আগে ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা ১৩ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া পলাতক আসামিদের জন্য সাতদিনের মধ্যে দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়, যা ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে।
গত ৮ অক্টোবর পৃথক দুই মামলায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। পরে ট্রাইব্যুনাল তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। র্যাবের টিএফআই-সেলে নির্যাতনের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনকে আসামি করা হয়।
অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, ব্রিগেডিয়ার জাহাঙ্গীর আলম, তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, কেএম আজাদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কামরুল হাসান, মাহাবুব আলম, আবদুল্লাহ আল মোমেন, সারোয়ার বিন কাশেম, খায়রুল ইসলাম, মশিউর রহমান জুয়েল ও সাইফুল ইসলাম সুমন। এর মধ্যে ১০ সেনা কর্মকর্তা গ্রেপ্তার রয়েছেন।
জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল (জেআইসি) বা আয়নাঘরে গুমের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের অন্য মামলায় ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলাতেও শেখ হাসিনা ও তারিক আহমেদ সিদ্দিকের নাম রয়েছে। অন্যান্য আসামির মধ্যে আছেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক লে. জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আকবর হোসেন, সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব.) সাইফুল আবেদিন, লে. জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম, সাবেক ডিজি লে. জেনারেল তাবরেজ শামস চৌধুরী, সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক, মেজর জেনারেল তৌহিদুল ইসলাম, মেজর জেনারেল সরওয়ার হোসেন, মেজর জেনারেল কবির আহাম্মদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজহার সিদ্দিকী এবং লে. কর্নেল (অব.) মখসুরুল হক। এ মামলায় তিনজন কারাগারে থাকলেও বাকিরা পলাতক রয়েছেন।