হামাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পেশ, মুক্তি দেবে জীবিত ১০ ইসরায়েলি জিম্মি
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৭:৪৩ পিএম, ১৯ আগস্ট ২০২৫
গাজায় সংঘাতের মধ্যেই হামাস একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করেছে, যা অন্তর্ভুক্ত করছে প্রায় ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মির অর্ধেকের মুক্তি। এই পদক্ষেপ ধাপে ধাপে শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বাস্তবায়িত হবে।
মিশর ও কাতারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কায়রোতে কয়েকদিন ধরে চলা আলোচনার পর এই প্রস্তাব সামনে এসেছে। একই সময় ইসরায়েলে দেশের সর্ববৃহৎ বিক্ষোভের মুখোমুখি হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, যেখানে জনগণ জিম্মিদের দ্রুত মুক্তির দাবি করছে।
নেতানিয়াহু বিক্ষোভের সমালোচনা করে বলেছেন, “বিক্ষোভকারীরা আলোচনায় হামাসের অবস্থানকে শক্তিশালী করছে।” বিক্ষোভের আয়োজকরা রোববার নতুন বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন।
মিশরীয় সূত্র জানিয়েছে, হামাস প্রস্তাবে ৬০ দিনের জন্য গাজায় সামরিক অভিযান স্থগিত করার প্রস্তাব দিয়েছে। এই সময়ে আটক ইসরায়েলি জিম্মির অর্ধেককে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে। দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘাতের সমাধানের দিকে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মিশর ইতিমধ্যেই মধ্যস্থতাকারী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে ইসরায়েল গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য নতুন সামরিক আক্রমণের হুমকি দিচ্ছে, যা প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে বাস্তুচ্যুত করতে পারে।
প্রস্তাবটি সোমবার (১৮ আগস্ট) ইসরায়েলের কাছে উপস্থাপন করা হবে। কিন্তু নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে বলেছেন, “ইসরায়েল অংশীভূত চুক্তিতে আগ্রহী নয়। হামাস যদি সব জিম্মিকে একসাথে মুক্তি দেয় এবং গাজার অস্ত্রশস্ত্র সরিয়ে নেয়; তবেই যুদ্ধ শেষের জন্য সম্মত হবে।”
সাম্প্রতিক আলোচনার পরও ইসরায়েলে রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, নতুন আক্রমণের সময় অবশিষ্ট জিম্মিদের জীবন ঝুঁকিতে পড়তে পারে। এই সতর্কবার্তা দেশজুড়ে বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত আক্রমণ ও বোমাবর্ষণে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি পূর্বাঞ্চল থেকে পশ্চিম ও দক্ষিণের নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো ও দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি নিয়ে ইসরায়েলি সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে।
জিম্মি ও নিখোঁজ পরিবার ফোরাম নেতানিয়াহুর তীব্র সমালোচনা করেছে। তারা বলেছেন, “তাদের ২২ মাস ধরে গাজায় অসহায় অবস্থায় রাখা হয়েছে।”
ইসরায়েলের বিরোধী দলও নেতানিয়াহুর নীতি কঠোরভাবে সমালোচনা করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, “তিনি পূর্বেও হামাসকে শক্তিশালী করেছিলেন এবং বর্তমানে একই নীতি অব্যাহত রেখেছেন।”
রাজনৈতিক চাপ ও জনগণের ক্ষোভের মধ্যে ইসরায়েলের সম্ভাব্য স্থল আক্রমণ এবং জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে দেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে।
সূত্র: গার্ডিয়ান