ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় ‘ত্রাণে’ বাধা দেওয়ার অভিযোগ জাতিসংঘের
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১০:২৮ এম, ২৯ আগস্ট ২০২৫
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৬২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর পাশাপাশি অঞ্চলজুড়ে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমেও বাধা সৃষ্টি করছে ইসরায়েল, এমন অভিযোগ করেছে জাতিসংঘ।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে গাজায় পরিচালিত প্রায় অর্ধেক মানবিক সহায়তা কার্যক্রম বিলম্বিত বা বাধাগ্রস্ত হয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কারণে।
জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয় দপ্তর (OCHA)-এর বরাত দিয়ে সংস্থার মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বৃহস্পতিবার বলেন, “গাজার ভেতরে মানবিক কার্যক্রম এখনও বিলম্ব ও বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। এমনকি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ যেসব মিশনের অনুমোদন দিয়েছে, সেগুলো সম্পন্ন করতেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “অনেক সময় টিমগুলোকে বিপজ্জনক, যানজটপূর্ণ বা অচল সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।”
গত বুধবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সময়কালে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য করা ৮৯টি প্রচেষ্টার মধ্যে কার্যকর হয়েছে মাত্র ৫৯ শতাংশ। এর মধ্যে ২৬ শতাংশ মিশন প্রথমে অনুমোদন পেলেও পরে বাধাগ্রস্ত হয়, ৮ শতাংশ পুরোপুরি প্রত্যাখ্যাত হয় এবং ৭ শতাংশ সংগঠকদের পক্ষ থেকেই প্রত্যাহার করতে হয়।
বাধাগ্রস্ত ২৩টি মিশনের মধ্যে শেষ পর্যন্ত পাঁচটি সম্পন্ন হয়েছে, যার মধ্যে ছিল সীমান্ত থেকে ত্রাণ সংগ্রহ ও রোগী স্থানান্তরের মতো কার্যক্রম। বাকি ১৮টি মিশন শেষ করা সম্ভব হয়নি।
মানবিক পরিস্থিতির অবনতিতে উদ্বেগ জানিয়ে ডুজারিক বলেন, জাতিসংঘ আশঙ্কা করছে গাজা সিটির আরও এলাকাজুড়ে নতুন করে বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালাতে পারে ইসরায়েল। “যদি পূর্ণমাত্রার অভিযান শুরু হয়, তবে এর প্রভাব হবে ভয়াবহ। শুধু গাজা সিটির নয়, পুরো উপত্যকার জন্য,” বলেন তিনি।
জাতিসংঘের জনসংখ্যা পর্যবেক্ষণ দলের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার ও মঙ্গলবার দুই দিনে গাজার উত্তরাংশ থেকে দক্ষিণে পালিয়েছে প্রায় ১,৩০০ মানুষ। ১৪ আগস্ট ইসরায়েল নতুন সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২০ হাজার মানুষ উত্তর থেকে দক্ষিণে গিয়েছেন।
সামগ্রিকভাবে গাজা সিটি থেকে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬০ হাজারে। ডুজারিক বলেন, “গাজার সর্বত্র লাখ লাখ পরিবার অতিরিক্ত ভিড়, অমানবিক ও অনিরাপদ অবস্থায় বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করছেন।”