৫ বছর পর ভারত-চীন সরাসরি ফ্লাইট চালু হতে যাচ্ছে


৫ বছর পর ভারত-চীন সরাসরি ফ্লাইট চালু হতে যাচ্ছে

ভারত ও চীন পাঁচ বছরেরও বেশি সময় পর আবারও সরাসরি ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নিচ্ছে। বিশ্বের দুই জনবহুল ও দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির মধ্যে এই নতুন আকাশপথ সংযোগ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায় সূচিত করবে।

চীনের তিয়ানজিনে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের সম্মেলনে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ পরিকল্পনার ঘোষণা দেন। তবে কবে থেকে ফ্লাইট চালু হবে তা এখনো নির্ধারিত হয়নি। সাত বছর পর চীন সফরে গিয়েছেন মোদি, এর আগে তিনি জাপান সফর সম্পন্ন করেছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে টানাপোড়েনের সময় ভারত-চীনের এই নতুন সমঝোতা শুধু আঞ্চলিক নয়, বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রেক্ষাপটেও গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন এবং রাশিয়ার তেল আমদানির কারণে দিল্লির ওপর চাপ বাড়ছে। অন্যদিকে, বাণিজ্য বিরোধের মধ্যেও চীন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আপাতত যুদ্ধবিরতির অবস্থানে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দিল্লি ও বেইজিংয়ের ঘনিষ্ঠতা কৌশলগত দিক থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ।

ভারতের বৃহত্তম বেসরকারি এয়ারলাইন ইন্ডিগো ইতোমধ্যে চীনে ফ্লাইট চালুর আগ্রহ প্রকাশ করেছে। রাষ্ট্রীয় সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়াও এ রুটে যাত্রা শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। চীনের শীর্ষ তিন এয়ারলাইনস, এয়ার চায়না, চায়না সাউদার্ন এবং চায়না ইস্টার্ন ও ভারতের বিভিন্ন শহরে ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা করছে।

করোনাভাইরাস মহামারির সময় দুই দেশের মধ্যে যাত্রীবাহী বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ২০২০ সালে সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর থেকে সরাসরি যোগাযোগ আর চালু হয়নি। এই সময় হংকং বা সিঙ্গাপুরকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করতে হয়েছে যাত্রীদের। অথচ আগে দিল্লি, মুম্বাই ও কলকাতা থেকে বেইজিং, সাংহাই, গুয়াংজু ও চেংডুতে সরাসরি ফ্লাইট চালু ছিল। সম্পর্ক স্বাভাবিক করার অংশ হিসেবে চলতি বছরের জানুয়ারি ও জুনে দু'দফা আলোচনায় ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্ত হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। এবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসায় উড়োজাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে একটি নতুন সেতুবন্ধন তৈরি হতে চলেছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে, যেখানে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহজ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এরপর চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াংই দিল্লিতে মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকের পর মোদি বলেন, “পারস্পরিক স্বার্থকে সম্মান জানিয়ে ভারত ও চীনের সম্পর্ক এগোচ্ছে।” গত জুলাই মাসে ভারত চীনা নাগরিকদের জন্য পর্যটক ভিসা চালুর অনুমতি দেয় এবং দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধ, জ্বালানি বাজারের অনিশ্চয়তা ও ভূরাজনৈতিক অস্থিরতার এই সময়ে সরাসরি বিমান যোগাযোগ শুধু যাত্রীদের জন্য নয়, বরং ব্যবসা ও কূটনীতির ক্ষেত্রেও নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×