গাজায় সহায়তা দিতে ১০০ জাহাজের যাত্রা শুরু


গাজায় সহায়তা দিতে ১০০ জাহাজের যাত্রা শুরু

গাজার মানুষের জন্য মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে একটি বিশাল নৌবহর সমুদ্রপথে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে। নৌবহরের প্রথম ধাপে ডজনখানেক ছোট জাহাজ থাকবে, যা চিকিৎসক, স্বেচ্ছাসেবী, মানবিক কর্মী এবং জরুরি সাহায্য সামগ্রী বহন করবে। নৌবহরটি ৩১ আগস্ট স্পেনের একটি বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করবে এবং ৪ সেপ্টেম্বর তিউনিসিয়ায় দ্বিতীয় দলের সঙ্গে সংযুক্ত হবে।

সংগঠকরা এই অভিযানকে বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র মিশন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, যেখানে অন্তত ৪৪টি দেশের প্রতিনিধিরা এবং প্রায় ১০০টি জাহাজ অংশ নেবে।

কোন দেশগুলো অংশ নিচ্ছে? গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার তথ্যানুযায়ী, ছয়টি মহাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশ এই বহরে অংশ নিচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশ। অংশগ্রহণকারীরা কোনো সরকার বা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংযুক্ত নয় এবং নিজেদের উদ্যোগে গাজার নিপীড়িত মানুষের জন্য এই মিশনে যোগ দিয়েছেন।

অংশগ্রহণকারী সংগঠনগুলোঃ ফ্লোটিলাটি চারটি প্রধান কোয়ালিশনের নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে, যারা পূর্বেও গাজার জন্য সমুদ্র ও স্থল অভিযানে অংশ নিয়েছে: গ্লোবাল মুভমেন্ট টু গাজা (জিএমটিজি) পূর্বে ‘গ্লোবাল মার্চ টু গাজা’ নামে পরিচিত, আন্তর্জাতিক সহমর্মিতা দেখানো এবং গাজার অবরোধ ভাঙার জন্য কাজ করে।

ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে মাডলিন ও হানদালা সহ পূর্বের ফ্লোটিলাগুলো পরিচালনা করেছে।

মাগরিব সুমুদ ফ্লোটিলা উত্তর আফ্রিকা-ভিত্তিক উদ্যোগ, যা প্যালেস্টাইনি সম্প্রদায়কে সহায়তা পৌঁছে দেয়।

সুমুদ নুসানতারা মালয়েশিয়া ও আরও ৮টি দেশের স্বেচ্ছাসেবীদের নেতৃত্বে গঠিত একটি উদ্যোগ, যা গাজার অবরোধ ভাঙা এবং গ্লোবাল সাউথে সংহতি গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে।

এই চারটি কোয়ালিশন মিলে ইতিহাসের বৃহত্তম সমন্বিত বেসামরিক ফ্লোটিলা গঠন করবে।

অংশগ্রহণকারীরাঃ স্বেচ্ছাসেবী, মানবিক কর্মী, চিকিৎসক, শিল্পী, ধর্মীয় নেতা, আইনজীবী, সমাজবিদ ও নাবিকরা এই অভিযানে অংশ নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে স্টিয়ারিং কমিটিতে রয়েছেন সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থানবার্গ, ইতিহাসবিদ ক্লিয়োনিকি আলেক্সোপোলু, মানবাধিকারকর্মী ইয়াসেমিন আকার, পরিবেশবিদ থিয়াগো অবিলা, রাজনৈতিক বিজ্ঞানী ও আইনজীবী মেলানি শুইৎজার, ফিজিসিস্ট মারিয়া এলেনা ডেলিয়া, প্যালেস্টাইনি এক্টিভিস্ট সাইফ আবুকেশেক, এবং মানবিক সহায়ক মুহাম্মদ নাদির আল-নুরি।

যাত্রার সময়সূচিঃ বার্সেলোনার প্লাকা ডেল রেই-তে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তার কারণে নির্দিষ্ট জাহাজ ও বন্দরের তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে না। তবে প্রায় ৩,০০০ কিলোমিটার (১,৬২০ নটিক্যাল মাইল) পথ সম্পন্ন করতে ফ্লোটিলাকে প্রায় ৭–৮ দিন সময় লাগবে।

কেন সমুদ্রপথে সাহায্য পাঠানো হচ্ছে? : ফ্লোটিলা খাদ্য, ওষুধ ও অন্যান্য জরুরি সামগ্রী সংকটাপন্ন অঞ্চলে পৌঁছে দেয়। যখন বিমান বা স্থল রুট বন্ধ থাকে বা নিরাপদ নয়, তখন এই ধরনের অভিযান করা হয়। ২০০৭ সালের পর ইসরায়েল গাজার আকাশ ও জলসীমা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে, যা পণ্য ও মানুষের চলাচল সীমিত করেছে।

ফ্লোটিলার লক্ষ্য গাজার অবরোধ ভাঙা, মানবিক সহায়তা পৌঁছানো এবং একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠানো যে অবরোধ অবিলম্বে শেষ হতে হবে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×