পাকিস্তান-রাশিয়া ঘনিষ্ঠ হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারসাম্য রক্ষায়
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০১:১৭ পিএম, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
শাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনের ফাঁকে চীনের বেইজিংয়ে বৈঠকে মিলিত হয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৈঠকে তারা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, জ্বালানি, অবকাঠামো ও আঞ্চলিক সহযোগিতা আরও দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি দেন।
টিআরটি ওয়ার্ল্ডের বরাতে জানা যায়, দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গভীর করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য কমেছে। তিনি বলেন, “আমাদের দেখতে হবে কেন বাণিজ্য হ্রাস পেয়েছে এবং তা বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে হবে।” এছাড়া তিনি পাকিস্তানের ভয়াবহ বন্যার জন্য শোক প্রকাশ করে আশা করেন, শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বে দেশটি দ্রুত সংকট কাটিয়ে উঠবে।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শরিফ জানান, গত বছর পাকিস্তান রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল আমদানি শুরু করায় বাণিজ্যে নতুন গতি এসেছে। তিনি বেলারুশ, রাশিয়া, কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান, আফগানিস্তান হয়ে পাকিস্তানে পৌঁছানো একটি আঞ্চলিক বাণিজ্য করিডরের গুরুত্বও তুলে ধরেন।
গত বছর আস্তানায় দুই দেশের মধ্যে বৈঠকের পর কৃষি, লোহা-ইস্পাত, জ্বালানি ও পরিবহন খাতে একাধিক চুক্তি হয়েছে। জুলাইয়ে করাচির পাকিস্তান স্টিল মিলস পুনরুজ্জীবনের সিদ্ধান্ত নেয় ইসলামাবাদ ও মস্কো।
শরিফ রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের আমন্ত্রণে মস্কো সফরের আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, “অনেক বছর হয়ে গেছে আমি রাশিয়া যাইনি। ফিরে গিয়ে পুরোনো দিনের স্মৃতি মনে করতে চাই।”
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান রাশিয়া-ভারত সম্পর্ককে সম্মান করে, তবে ইসলামাবাদ মস্কোর সঙ্গে নিজেদের সম্পর্কও শক্তিশালী করতে চায়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জ্বালানি চাহিদা ও বহুমুখী অংশীদারিত্বের প্রয়োজন থেকেই পাকিস্তান রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে। রাশিয়ার পক্ষেও দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পাশাপাশি পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ।
পুতিন পাকিস্তানকে “ঐতিহ্যবাহী অংশীদার” হিসেবে উল্লেখ করে জাতিসংঘ ও পার্লামেন্টারি কূটনীতিতে সহযোগিতা বাড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
বৈঠকে উভয় নেতা জ্বালানি, অবকাঠামো, কৃষি ও পরিবহন খাতে সম্পর্ক জোরদারে সম্মত হন। শরিফ বলেন, এই অংশীদারিত্ব “আঞ্চলিক অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি” নিয়ে আসবে।
পুতিন আশা প্রকাশ করেন, আসন্ন এসসিও প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনসহ অন্যান্য বৈঠকগুলো দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নেবে।