লুটপাট ও হামলা বন্ধের আহ্বান নেপালের সেনাপ্রধানের
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০২:৩২ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নেপালে চলমান সহিংসতা ও লুটপাট বন্ধে আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেল। তিনি আন্দোলনের পরিবর্তে সংলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থী ও তরুণদের আন্দোলনের মুখে মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি ও প্রেসিডেন্ট ও সরকারপ্রধান রাম কুমার পৌদেল। তাদের পদত্যাগের পর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণ করে সেনাবাহিনী।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে সেনাপ্রধান বলেন, “আমরা কঠিন একটি সময় পার করছি এবং কিছু গোষ্ঠী এ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে লুটপাট, হামলা, সরকারি-বেসরকারি সম্পদ ধ্বংস করছে।”
তিনি বলেন, “আমরা আন্দোলনকারীদের অনুরোধ করছি, আপনারা প্রতিবাদ কর্মসূচি থামান এবং দেশে শান্তি স্থাপনের স্বার্থে আলোচনার জন্য এগিয়ে আসুন। আমাদের এখন বর্তমান কঠিন পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক করতে হবে; সেই সঙ্গে রক্ষা করতে হবে আমাদের ঐতিহাসিক এবং জাতীয় ঐতিহ্য, জনগণ এবং তাদের সহায়-সম্পদ এবং বিদেশি কূটনীতিকদের।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামসহ) ২৬টি প্ল্যাটফর্মে নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থী ও তরুণরা তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন। মাত্র দুই দিনের এই আন্দোলনের জেরে পতন হয় প্রধানমন্ত্রী অলির সরকারের। তবে এই সময় ব্যাপক সহিংসতাও ঘটে।
৮ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান ১৯ জন আন্দোলনকারী, আহত হন শতাধিক। পরদিন, ৯ সেপ্টেম্বর, বিক্ষোভ ভয়াবহ রূপ নেয়। আন্দোলনকারীরা পার্লামেন্ট ভবন, মন্ত্রী-এমপিদের বাসভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ শুরু করেন। পরিস্থিতির অবনতিতে মঙ্গলবার দুপুরে পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী অলি এবং সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাওদেল।
সেনাপ্রধান তার ভাষণে আরও বলেন, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দেশজুড়ে কারফিউ জারি আছে। আমি সবপক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। গত দুই দিনে যথেষ্ট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আরও ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকুন এবং আলোচনার টেবিলে আসুন। একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণের সব দাবি আলোচনার ভিত্তিতে সমাধান সম্ভব।”
তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, “আর যারা সেনাবাহিনীর এ আহ্বান উপেক্ষা করে প্রতিবাদ, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, হামলা প্রভৃতি চালিয়ে যেতে চান, তাদের উদ্দেশে বলছি, এখন থেকে এ ধরণের কর্মকাণ্ডকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে এবং যারা এসব কার্যক্রমে লিপ্ত থাকবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর পদক্ষেপ নেবে।”