ন্যাটো দেশগুলো তেল কেনা বন্ধ করলে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেবেন ট্রাম্প
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৯:৪১ এম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ন্যাটো দেশগুলো যদি রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ করে, তবে মস্কোর বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন বলে সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে তিনি প্রস্তাব দিয়েছেন, চীনের ওপর ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসাতে হবে। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল-এ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ন্যাটো সদস্যরা রাজি হলেই তিনি “রাশিয়ার ওপর বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা” জারি করবেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ন্যাটো দেশগুলোর রাশিয়ার তেল কেনা “অবিশ্বাস্য” এবং এটি মস্কোর সঙ্গে তাদের দর-কষাকষির অবস্থান দুর্বল করছে।
আগেও একাধিকবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে মস্কো সেই হুমকি উপেক্ষা করলেও তিনি পদক্ষেপ নেননি। এবার তিনি সরাসরি ন্যাটো দেশগুলোকে আহ্বান জানালেন রাশিয়ার জ্বালানি বর্জনের পাশাপাশি চীনের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করতে।
ট্রাম্পের দাবি, এই পদক্ষেপ চীনের রাশিয়ার ওপর প্রভাব কমাবে এবং চলমান যুদ্ধ দ্রুত শেষ করতে “বড় সহায়তা” দেবে। তার ভাষায়, “আমি প্রস্তুত। আপনারা যখন বলবেন, তখনই শুরু করব।”
ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর ইউরোপ ধীরে ধীরে রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়েছে। ২০২২ সালে ইইউ দেশগুলো যেখানে ৪৫ শতাংশ গ্যাস রাশিয়া থেকে আমদানি করত, এ বছর সেই হার নেমে আসবে প্রায় ১৩ শতাংশে। কিন্তু ট্রাম্প মনে করছেন, এ পরিমাণও যথেষ্ট নয়।
সম্প্রতি রাশিয়া-ন্যাটোর উত্তেজনা আরও বেড়েছে। গত বুধবার এক ডজনের বেশি রুশ ড্রোন পোল্যান্ডের আকাশসীমায় ঢুকে পড়ে। যদিও মস্কো দাবি করেছে, পোল্যান্ডের কোনো স্থাপনায় হামলার ইচ্ছা তাদের ছিল না।
এদিকে ফ্রান্স, জার্মানি ও ডেনমার্ক ন্যাটোর নতুন মিশনে যোগ দিয়ে পূর্ব সীমান্তে সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করছে। একই সময়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউরোপীয় দেশগুলোকে রাশিয়ার তেল ও গ্যাস কেনা সম্পূর্ণ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এবিসি নিউজকে বলেন, “আমাদের রাশিয়ার কাছ থেকে কোনো ধরনের জ্বালানি কেনা বন্ধ করতে হবে। শুধু তাই নয়, রাশিয়ার সঙ্গে কোনো ধরনের চুক্তিও করা যাবে না।”
গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার জানিয়েছে, ২০২২ সালের পর থেকে ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়ার জ্বালানি আমদানিতে প্রায় ২১০ বিলিয়ন ইউরো ব্যয় করেছে, যা ইউক্রেন যুদ্ধ চালিয়ে যেতে মস্কোকে অর্থ জুগিয়েছে।
ইইউ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ২০২৮ সালের মধ্যে রাশিয়ার জ্বালানি সম্পূর্ণভাবে বর্জন করবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র চাইছে প্রক্রিয়াটি আরও দ্রুত হোক। ট্রাম্পের এই বার্তা সরাসরি ন্যাটোর উদ্দেশে দেওয়া, যেখানে তুরস্কও রয়েছে। ন্যাটোর একমাত্র সদস্য হিসেবে আঙ্কারা এখনও রাশিয়ার অন্যতম বড় ক্রেতা এবং ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়ায়, তাকে রাজি করানো সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।