গাজায় প্রাণহানির সংখ্যা ছাড়াল ৬৫ হাজার, একদিনে আরও ৯৮ নিহত
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৯:৩৭ এম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের প্রভাব ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছে। সর্বশেষ একদিনে আরও ৯৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার পর, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় মোট প্রাণহানির সংখ্যা পেরিয়েছে ৬৫ হাজার।
এই তথ্য বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এ খবর নিশ্চিত করেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, “মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে ৯৮টি মরদেহ আনা হয়েছে এবং আহত অবস্থায় এসেছে ৩৮৫ জন।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “আসলে নিহত ও আহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। অনেকেই এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন এবং উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও জনবল না থাকায় তাদের সহায়তা করা যাচ্ছে না।”
২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এই পর্যন্ত সেখানে মোট নিহত হয়েছেন ৬৫ হাজার ৬২ জন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬৯৭ জন।
চলতি বছরের ১৯ জুন, যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েল দুই মাসের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও, ১৮ মার্চ সেই যুদ্ধবিরতি ভেঙে পুনরায় গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। এরপরের পাঁচ মাসে সেখানে প্রাণ হারান ১২ হাজার ৫১১ জন, আহত হন ৫৩ হাজার ৬৫৬ জন।
গাজায় খাদ্য সংকটও দিন দিন প্রকট হচ্ছে। মে মাসের শেষ দিক থেকে ইসরায়েলি সেনারা ত্রাণ সংগ্রহে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালিয়ে আসছে। মন্ত্রণালয় জানায়, “২৭ মে এই ধরনের প্রথম ঘটনা ঘটে এবং এরপর থেকে এটি নিয়মিতই ঘটছে।”
সর্বশেষ বুধবারও ত্রাণ সংগ্রহ করতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ৭ জন নিহত ও ৮৭ জন আহত হন। এ পর্যন্ত ত্রাণ সংগ্রহে গিয়ে গুলি খেয়ে মোট ২ হাজার ৫০৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১৮ হাজার ৩৪৮ জন আহত হয়েছেন।
এছাড়া ২ মার্চ থেকে গাজায় খাদ্য ও ত্রাণ সরবরাহ সীমিত করে দেয় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এতে চরম খাদ্যাভাব ও অপুষ্টি দেখা দেয়। শুধুমাত্র বুধবার, এই কারণে প্রাণ হারিয়েছেন ৪ জন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গত প্রায় দুই বছরে গাজায় খাদ্যাভাব ও অপুষ্টিজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে ৪৩২ জনের, যাদের মধ্যে ১৪৬ জন শিশু।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল একাধিকবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। ইতোমধ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)-এ একটি মামলাও চলছে।