গাজায় সামরিক অবস্থান ধরে রাখার ইঙ্গিত ইসরায়েলি সেনাপ্রধানের


গাজায় সামরিক অবস্থান ধরে রাখার ইঙ্গিত ইসরায়েলি সেনাপ্রধানের

গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর পিছু হটার পর যে ‘হলুদ রেখা’ তৈরি হয়েছে, সেটিই এখন কার্যত নতুন সীমান্ত হিসেবে ব্যবহৃত হবে এমন ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জমির। 

রোববার (৭ ডিসেম্বর) সামরিক এক বিবৃতিতে তিনি স্পষ্ট করে জানান, এই সীমারেখা গাজাকে ফিলিস্তিনিদের অন্যান্য অধিকৃত এলাকা থেকে পৃথক করার নতুন বাস্তবতা তৈরি করছে।

কাতারভিত্তিক আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় অবস্থানরত ইসরায়েলি সৈন্যদের সঙ্গে আলাপকালে জমির দাবি করেন, ইসরায়েলি বাহিনী এখনও গাজার বিশাল অংশে কার্যকর নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে এবং ‘নিরাপত্তা রেখা’ বরাবর অবস্থান ধরে রাখাই তাদের পরিকল্পনা।

হলুদ রেখাকে তিনি একটি অগ্রবর্তী নিরাপত্তা বেষ্টনী ও চলমান সামরিক অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্র হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, “গাজা স্ট্রিপের বিস্তৃত অংশে আমাদের অপারেশনাল নিয়ন্ত্রণ রয়েছে এবং আমরা সেই প্রতিরক্ষা রেখাগুলোতে থাকব। হলুদ রেখাটি একটি নতুন সীমান্তরেখা, যা আমাদের সম্প্রদায়গুলির জন্য একটি সামনের রক্ষণাত্মক রেখা এবং অপারেশনাল কার্যকলাপের একটি রেখা হিসাবে কাজ করছে।”

বিশ্লেষকদের মতে, তার এই মন্তব্য স্পষ্ট করে যে, মার্কিন মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি অনুসারে সাময়িক অবস্থান নেওয়ার কথা থাকলেও ইসরায়েল এই সীমারেখাকে দীর্ঘমেয়াদি দখল ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে ব্যবহার করছে। বাস্তবে এই রেখা গাজাকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে।

দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের তথ্যমতে, ইসরায়েল গত অক্টোবরে যুদ্ধবিরতির পর এই রেখাকে আরও দৃঢ় করতে আউটপোস্ট, বালির বাঁধ, কাঁটাতার, হলুদ কংক্রিট মার্কার, ড্রোন ও সাঁজোয়া ইউনিট মোতায়েন করে। সেনা কর্মকর্তারা পত্রিকাকে জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত চিহ্নিতকরণের কাজের মাত্র ১০ থেকে ২০ শতাংশ শেষ হয়েছে।

পত্রিকার আগের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, গাজাকে দুই ভাগে বিভক্ত করার এই পরিকল্পনা এবং হলুদ রেখার পেছনের অঞ্চল পুনর্গঠনের প্রস্তাব প্রথম উঠে আসে মার্কিন বিশেষ দূত জ্যারেড কুশনার এবং মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের পক্ষ থেকে।

তথাকথিত যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েলি হামলায় গাজায় হতাহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সময়ে শিশুসহ অন্তত ৩৭০–৩৭৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গড়ে দৈনিক আটজন বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে—এই যুদ্ধবিরতি গাজার মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।

সূত্র: আল–জাজিরা

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×