১৫ দিন বন্ধ ঢাবি, হল ত্যাগের নির্দেশ মানতে নারাজ শিক্ষার্থীরা


১৫ দিন বন্ধ ঢাবি, হল ত্যাগের নির্দেশ মানতে নারাজ শিক্ষার্থীরা

সাম্প্রতিক ভূমিকম্প ও ধারাবাহিক পরাঘাতের প্রেক্ষাপটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) আগামী ১৫ দিনের জন্য সব একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত করেছে। একই সঙ্গে রোববার বিকেল ৫টার মধ্যে সকল শিক্ষার্থীকে আবাসিক হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আকস্মিক এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতোমধ্যে তীব্র মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে; অনেকে হল ছাড়ার বাধ্যতামূলক নির্দেশ মানতে রাজি নন।

অভিযোগের সুরও শোনা গেছে শিক্ষার্থীদের মুখে। তাঁদের ভাষ্য—নিরাপত্তার কারণ দেখালেও প্রশাসনের মূল উদ্দেশ্য ‘স্বাধীনতা টাওয়ার’ ভবনটি কর্মচারীদের জন্য ফিরিয়ে নেওয়া।

শনিবার (২২ নভেম্বর) জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

ভূমিকম্পের পর হাজী মুহাম্মদ মুহসিন হলের অনেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ ‘স্বাধীনতা টাওয়ারে’ অবস্থান নিতে শুরু করেন। তাঁরা নিজেদের বিছানা–সরঞ্জামসহ সেখানে আশ্রয় নেন, যা নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাবি শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রাহাত বলেন, “১৫ দিনের জন্য ঢাবি বন্ধ থাকবে। বিশেষত মুহসিন হল শিক্ষার্থীদের অভিযোগ কর্মচারী ভবন স্বাধীনতা টাওয়ার দখলমুক্ত করতে তড়িঘড়ি করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ১৫ দিনের মধ্যে আতঙ্ক কমে যাবে, ফলে হল স্থায়ীভাবে সংস্কার করার চাপ কমে আসবে। তখন সাধারণ কিছু ইন্সপেকশনের মাধ্যমে দায় সারা সম্ভব হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখাকে অসমর্থন করি না। তবে এর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে, এবং হলগুলো ভূমিকম্প-সহনীয় করে তোলার জন্য স্থায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।”

শিক্ষার্থী ফেরদৌস আইমান বলেন, “শিক্ষার্থীরা পলাশীর স্টাফ কোয়ার্টার দখল করছে। প্রশাসন এবং ছাত্র সংসদের যোগসাজশে তাই ১ দিনের মধ্যে হল ছাড়তে বাধ্য করার নোটিশ দেওয়া হয়েছে।”

আরেক শিক্ষার্থী আবির হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক বলে মনে করেন। তাঁর মন্তব্য  “সামনের ডিসেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অ্যাডমিশন টেস্ট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীরই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছুদের টিউশনি আছে, অনেকের রিসার্চ, ইন্টার্নশিপ বা জব প্রিপারেশনের ব্যাপার আছে। হল ছাড়তে বাধ্য করে এতগুলো মানুষকে বিড়ম্বনায় ফেলার পয়েন্ট কী?”

তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, “ইন্সপেকশানের সময় হলে যদি কেউ থাকতে চায়, তাহলে অসুবিধা কী? হলে কেউ থাকলে ইন্সপেকশান করা যাবে না, নাকি? এমন তো না যে—১৫ দিন পরে একদম সেইফ হয়ে যাবে এই বিল্ডিং। দিনশেষে এই বিল্ডিংগুলোতেই আমাদের থাকতে হবে।”

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×