টিএসসিতে উচ্চস্বরে গান, আপত্তি জানিয়ে শিবির ট্যাগ পেলেন দুই হলের শিক্ষার্থী
- বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০১:০৮ এম, ২২ নভেম্বর ২০২৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রাঙ্গণে নবান্ন উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সন্ধ্যার পর যেন পরিণত হয় শব্দদূষণের উৎসবে। পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলতে থাকা উচ্চস্বরে গান ও বাদ্যযন্ত্রের শব্দে রোকেয়া হল ও শামসুন নাহার হলের শিক্ষার্থীরা বিরক্তি ও ক্ষোভে ফেটে পড়েন। সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হওয়া জয়ধ্বনি সাংস্কৃতিক সংগঠনের এই অনুষ্ঠান অনেক রাত পর্যন্ত চলে বলে যায় জানা যায়।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত এই নবান্ন আয়োজনের কন্সাড়টের গান-বাজনায় অসহনীয় শব্দদূষণের কারণে দুই হলের অনেক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রায় ৫০-৬০ জন শিক্ষার্থী ঝাড়ু হাতে টিএসসির দিকে গিয়ে আয়োজকদের কাছে সাউন্ড কমানোর অনুরোধ জানান। অভিযোগ রয়েছে, তাদের অনুরোধের জবাবে আয়োজকদের একজন ওই শিক্ষার্থীদের ‘শিবির’ বলে অপমান করেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, কয়েকদিন ধরেই টিএসসি এলাকায় ধারাবাহিক শব্দদূষণ তাদের হলে থাকা কঠিন করে তুলেছে।
ঢাবি শিক্ষার্থী নাসরীন আক্তার বলেন, “গত তিন দিন ধরে এমনভাবে উচ্চ সাউন্ডে গান বাজাচ্ছে রুমে থাকা দায় হয়ে গেছে। গতকাল রাত ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত পুরো শব্দ আমার রুম থেকে স্পষ্ট শোনা গেছে। পরীক্ষা থাকলে পড়াশোনা করা যায় না, মাথাব্যথাও হয়। ভেবেছিলাম ৫ আগস্টের পর অন্তত এ ধরনের পরিস্থিতি বদলাবে, কিন্তু এখনো একই অবস্থা।”
শামসুন নাহার হলের শিক্ষার্থী নিয়ন মণি অভিযোগ করে বলেন, “প্রোগ্রামের সাউন্ড সহনীয় মাত্রায় আনার অনুরোধ করলে সমঝোতার এক পর্যায়ে আয়োজকদের একজন যিনি রোকেয়া হলের শিক্ষার্থী আমাদের ফাউল শিবির বলে ট্যাগিং করেন। একপর্যায়ে আমার বান্ধবী মমোর হাত পর্যন্ত চেপে ধরেন। প্রক্টর স্যার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে পূর্বের বিজ্ঞপ্তি শনিবারের মধ্যে কার্যকর করা হবে।”
আরেক শিক্ষার্থী সাদিয়া হোসেন ঐশি বলেন, “জয়ধ্বনির প্রোগ্রাম কতটা নির্লজ্জ হলে আজকের দিনে মানুষ ট্রমায় ভুগছে, আর এরা রাত ১০টা পেরিয়ে গেলেও এখনো গানবাজনা চালিয়ে যাচ্ছে। বন্ধ করতে বললে উল্টো আমাদেরই শিবির বলা হচ্ছে।”
শামসুন নাহার হল সংসদের জিএস সামিয়া মাসুদ মমও একই অভিযোগ করে বিলেন, “টিএসসিতে কনসার্টের সাউন্ড কমাতে অনুরোধ করায় আমাদেরকে ফাউল শিবির বলে ট্যাগ দিয়েছে। আমরা সমঝোতার কথা বলছি, আর তারা এসে উল্টো আমাদেরই ট্যাগিং করছে।”
ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এবি জুবায়ের বলেন, টিএসসিতে উচ্চ শব্দে গান বাজানোর কারণে রোকেয়া হল ও শামসুন নাহার হলের শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী সন্ধ্যার পর টিএসসিতে উচ্চস্বরে আয়োজন করার কথা নয়।
উল্লেখ্য, দুই হলের শিক্ষার্থীদের সমস্যা বিবেচনায় গত ৮ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস ক্যাম্পাসে উচ্চস্বরে স্পিকার, মাইক ও গাড়ির হর্ন ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে।