সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ১৯ দিন ধরে নিখোঁজ ১৮ জেলে

গভীর সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে টানা ১৯ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন ১৮ জন জেলে। তাদের কেউই পরিবার বা অন্য কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। বন্ধ রয়েছে প্রত্যেকের মোবাইল ফোন। ট্রলারটির অবস্থান সম্পর্কেও জানা যাচ্ছে না কিছুই, ফলে নিখোঁজদের পরিবার দিন কাটাচ্ছেন চরম উৎকণ্ঠা আর উদ্বেগে।

নিখোঁজ ওই জেলেরা ১৩ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের নতুন ফিশারি ঘাট থেকে ‘খাজা আজমীর’ নামের একটি ফিশিং ট্রলারে করে সাগরে পাড়ি জমিয়েছিলেন। ট্রলারটির মালিক আলী আকবর নিজেও ছিলেন ওই অভিযানে। সেদিন রাতে স্ত্রী সেলিনা আক্তারের সঙ্গে শেষবারের মতো কথা বলেন তিনি। তারপর থেকে তার ফোন নম্বরসহ ট্রলারে থাকা অন্য জেলেদের ফোন একযোগে বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

নিখোঁজদের মধ্যে পরিচয় পাওয়া ১৩ জন হলেন - আলী আকবর (৪৯), আবু তাহের (৬৯), আবদুল মন্নান (৩৮), মো. রুবেল (২৭), আমির হোসাইন (২৭), মোহাম্মদ জামাল (৪৯), মোহাম্মদ ইসাক (৩৩), জামাল আহমদ (৩৪), মোহাম্মদ হেলাল (৩৫), শেফায়ত উল্লাহ (৩৯), জয়নাল আবেদীন জইন্যা (৫০), মোহাম্মদ এহছান (৩৮) এবং মোহাম্মদ ছালাউদ্দিন (৩৮)। বাকিদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিখোঁজ জেলেদের বাড়ি নোয়াখালী এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে।

আলী আকবরের স্ত্রী সেলিনা আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামীসহ মোট ১৮ জন শিফিং বোট নিয়ে ১৩ সেপ্টেম্বর সাগরে মাছ ধরতে গেছেন। তারা প্রায় সময় সাগরে মাছ ধরতে যান। প্রতি বারই এক সপ্তাই কিংবা ১০ দিন পর সাগর থেকে ফিরে আসেন। এখন তাদের সঙ্গে কোনোভাবে যোগাযোগও করা যাচ্ছে না। তাদের কোনও বিপদ হয়েছে কিনা, তাও বুঝতে পারছি না।’

আরেক নিখোঁজ জেলে, মাতারবাড়ীর আবদুল মন্নানের স্ত্রী জানান, তার ছোট সন্তানরা প্রতিদিন বাবার জন্য অপেক্ষা করছে। ভাঙা কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘ওরা বলে, বাবা কবে আসবে? আমি কী জবাব দেবো? চোখ মুছতে মুছতে ভাবি, যদি আজই ফিরে আসে।’

চট্টগ্রামের সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, ‘ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে নিখোঁজ জেলেদের সন্ধানে চেষ্টা চলছে। দেশের সব থানায় খবর দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।’