চরম অব্যবস্থাপনায় সোহরাওয়ার্দী কলেজের মেডিকেল সেন্টার
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৫:৫৪ পিএম, ৩১ জুলাই ২০২৫
রাজধানীর পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের মেডিকেল সেন্টার বর্তমানে চরম অব্যবস্থাপনার চিত্র বহন করছে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় এবং প্রশাসনিক নজরদারির অভাবে শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটি কার্যত অকেজো হয়ে পড়েছে।
আজ ৩১ জুলাই (বৃহস্পতিবার) স্বরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেডিকেল সেন্টারে নিয়মিত ওষুধ সরবরাহ তো দূরের কথা—একমাত্র প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ ‘নাপা’ ছাড়া আর কোনো ওষুধ নিয়মিত পাওয়া যায় না। ওষুধ ছাড়াও চিকিৎসা সরঞ্জামেরও তীব্র ঘাটতি রয়েছে।
সোহরাওয়ার্দী কলেজ মেডিকেল সেন্টারের ভেতরের অবস্থা আরও ভয়াবহ। জরাজীর্ণ একটি বেড, মেয়াদোত্তীর্ণ অক্সিজেন সিলিন্ডার, ভাঙা জানালা—সব মিলিয়ে নেই কোনো পরিপাটির ছোঁয়া, নেই কোনো আধুনিক চিকিৎসা সামগ্রী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, অসুস্থ হয়ে মেডিকেল সেন্টারে গেলেও প্রায়ই ডাক্তারকে পাওয়া যায় না। ভাগ্যক্রমে ডাক্তারকে পাওয়া গেলেও পাওয়া যায় না প্রয়োজনীয় ওষুধ। ক্লাস চলাকালীন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়া বা কোনো শিক্ষার্থীর সমস্যা হলে, কোনো ধরনের কাজেই আসে না কলেজের এই মেডিকেল সেন্টার।
এ সম্পর্কে মেডিকেল অফিসার ডা. কানিজ ফাতেমা বলেন, আমি গত এক বছর ধরে এই মেডিকেল সেন্টারের দায়িত্বে রয়েছি। শুরু থেকেই আমি কলেজ প্রশাসনকে বারবার বলেছি এই সমস্যাগুলোর কথা। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, আজ পর্যন্ত তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
এ সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে নাপা ছাড়াও রয়েছে সেলাইন, ইবুপ্রোফেন, এবং চিকিৎসা যন্ত্রপাতির মধ্যে রয়েছে ব্যান্ডেজ, কটন, সিজার ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার। আমি রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতি সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত সেন্টারে উপস্থিত থাকি এবং এই সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। উন্নয়ন কাজ করা আমার দায়িত্ব নয়, সেটা প্রশাসনের। আমি আমার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার চেষ্ঠা করছি। তবে সত্যি কথা হলো—এই মেডিকেলের অবস্থা খুবই খারাপ। বিশেষ করে গরমে এখানে বসা যায় না। দেখা গেলো পরীক্ষা চলাকালীন কয়েকজন শিক্ষার্থী হিটস্ট্রোক করে সেন্টারে এসেছিল। কিন্তু বসার মতো ঠান্ডা কোন জায়গায় নেই সেন্টারে। এতে করে তারা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। অথচ এসব সমস্যা নিয়ে প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে অনেক আগেই।
এই বিষয়ে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কাকলী মুখোপাধ্যায় বলেন, উন্নয়ন ফান্ডে যে টাকা ছিলো, তা ইতোমধ্যে কলেজের অন্যান্য খাতে খরচ হয়ে গেছে। নতুন করে যখন তহবিল আসবে, তখন মেডিকেল সেন্টারের সংস্কারসহ কলেজের অন্যান্য ক্ষেত্রেও উন্নয়নমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।