পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার পর উত্তেজনা
আফগানিস্তানে আবারও হামলার হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১১:৪০ এম, ১২ নভেম্বর ২০২৫
পাকিস্তান ইঙ্গিত দিয়েছে যে, সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ হিসেবে তারা আফগানিস্তানের ভেতরে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে পারে। ইসলামাবাদ এবং দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে সংঘটিত কয়েকটি আঘাতের পর এই হুঁশিয়ারি জানানো হলো।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফের ভাষ্য অনুযায়ী, আফগান তালেবান সরকার পাকিস্তানে হামলার পেছনে থাকা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দিচ্ছে। তিনি বলেন, “তালেবানের আশ্রয়ে থাকা গোষ্ঠীগুলোই বারবার আমাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।”
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) এই খবর প্রকাশ করেছে। সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, মাত্র দুই দিনের মধ্যে পাকিস্তানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বড় সন্ত্রাসী হামলা ঘটেছে। এর মধ্যে একটি দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের ওয়ানা ক্যাডেট কলেজে, আরেকটি রাজধানী ইসলামাবাদে। এই ঘটনায় দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধারী দেশটি কড়া নিরাপত্তা সতর্কতায় রয়েছে।
জিও নিউজের ‘আজ শাহজেব খানজাদা কে সাথ’ অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, “এই হামলাগুলোর পর সীমান্ত পার হয়ে আফগানিস্তানের ভেতরে অভিযান চালানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।” তিনি আফগান তালেবান সরকারের হামলার নিন্দাকে “অবিশ্বাসযোগ্য” বলে প্রত্যাখ্যান করেন।
খাজা আসিফ আরও বলেন, যদি ভারত বা আফগানিস্তান কোনো দুঃসাহসিক পদক্ষেপ নেয়, পাকিস্তান সমান জবাব দেবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তান কখনো আগ্রাসন শুরু করবে না, তবে আমাদের ওপর কোনো হামলা হলে কঠোর প্রতিক্রিয়া দেওয়া হবে।
ইসলামাবাদের সাম্প্রতিক আত্মঘাতী বিস্ফোরণে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন এবং ৩০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। এর আগে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে খাজা আসিফ লিখেছিলেন, “আমরা এক ধরনের যুদ্ধের মধ্যে আছি। যারা মনে করছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী শুধু সীমান্ত এলাকায় লড়ছে, ইসলামাবাদের এই আত্মঘাতী হামলাই তাদের চোখ খুলে দেওয়ার মতো।” তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী এই লড়াই সমগ্র পাকিস্তানের যুদ্ধ, এবং সেনাবাহিনীর ত্যাগই জাতিকে নিরাপত্তার বোধ দিচ্ছে।
হামলার পর এক বিবৃতিতে তিনি আফগান তালেবান সরকারের সঙ্গে আলোচনার সাফল্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। আসিফ বলেন, “কাবুলের নেতৃত্ব চাইলে পাকিস্তানে সন্ত্রাস রোধ করতে পারে। কিন্তু ইসলামাবাদে হামলার বার্তা এসেছে কাবুল থেকেই।”
রাজধানীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তিনি জানান, পাকিস্তান আগেই এমন হামলার আশঙ্কা করেছিল। ইসলামাবাদের সন্ত্রাসী হামলা তাদের স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে - “তোমাদের সব অঞ্চলই আমাদের নাগালের মধ্যে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তান সীমান্ত বা শহর; কোথাও সন্ত্রাস সহ্য করবে না এবং প্রতিটি হামলার শক্ত জবাব দেওয়া হবে।