বিএনপির চেয়ে জামায়াতের আয় দ্বিগুণ, ব্যয় ৫ গুণ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৬:১০ পিএম, ১২ আগস্ট ২০২৫
২০২৪ সালের জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেয়া ২৮টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে আয় ও ব্যয়ের পরিসংখ্যায় সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। অন্য বড় দল বিএনপি-কে ছাড়িয়ে জামায়াত দ্বিগুণের বেশি আয় করেছে এবং ব্যয় করেছে প্রায় পাঁচ গুণ বেশি।
অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী, জামায়াতে ইসলামীর ২০২৪ সালের আয় দাঁড়িয়েছে ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা এবং ব্যয় ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা।
অন্যদিকে, বিএনপির আয় ছিল ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪২ টাকা এবং ব্যয় ৪ কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৮২৩ টাকা। ফলে বিএনপির হাতে বর্তমানে রয়েছে ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ১৯ টাকা উদ্বৃত্ত।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী জানিয়েছেন, দলের আয় আসে সদস্যদের মাসিক চাঁদা, বই ও পুস্তক বিক্রি, ব্যাংক সুদ ও এককালীন অনুদান থেকে। আর ব্যয়ের বড় অংশ যায় কর্মসূচি বাস্তবায়ন, লিফলেট-মুদ্রণ এবং সহায়তাসহ অন্যান্য কাজে।
জামায়াতে ইসলামীর হিসাব বিবরণী থেকে জানা গেছে, দলটি সদস্য ও কর্মীদের চাঁদা থেকে আয় করেছে ১৬ কোটি ৫৬ লাখ ৪২ হাজার ১৬২ টাকা। কার্যনির্বাহী কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদের চাঁদা ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার ১৪৯ টাকা এবং ব্যক্তিগত অনুদান ১১ কোটি ৮৬ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৯ টাকা। দলীয় পত্রিকা, সাময়িকী ও বই বিক্রয় থেকে আয় ৯ লাখ ১১ হাজার ২৯০ টাকা এবং অন্যান্য উৎস থেকে ৭ লাখ ২১ হাজার ৭৯ টাকা। আগের বছরের স্থিতি ছিল ১০ কোটি ৪৯ লাখ ৪৫ হাজার ১৯১ টাকা।
ব্যয়ের মধ্যে কর্মীদের বেতন-ভাতা ও বোনাসে খরচ হয়েছে ৬ কোটি ৫৭ লাখ ৬৭ হাজার ৮৭৩ টাকা, আবাসন ও প্রশাসনিক কাজে ২ কোটি ৬৮ লাখ ৭ হাজার ৪৯৫ টাকা এবং ইউটিলিটি বিলগুলোতে ২ লাখ ৪৬ হাজার ১৮ টাকা ব্যয় হয়েছে। ডাক-টেলিফোন, ইন্টারনেট ও কুরিয়ার সার্ভিসে খরচ হয়েছে ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৫২৬ টাকা, আর আপ্যায়নে ১০ লাখ ৯৫ হাজার ৯৬২ টাকা ব্যয় হয়েছে।
পাবলিসিটি ও পরিবহন ব্যয়ে খরচ হয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ ৬ হাজার ৫৬৩ টাকা, যাতায়াতে ১ কোটি ২৭ লাখ ১ হাজার ৭৭৬ টাকা, জনসভা ও পথসভায় ব্যয় হয়েছে ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৫ টাকা। প্রার্থীদের অনুদান হিসেবে দেওয়া হয়েছে ১১ কোটি ৫ লাখ ১৫ হাজার ৪২০ টাকা, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যয় হয়েছে ৩২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৫০ টাকা এবং অন্যান্য খাতে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ১২ লাখ ৫৬ হাজার ৯৮৯ টাকা।
মোট ব্যয় হয়েছে ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা।
তাদের কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকার তথ্যও প্রকাশিত হয়েছে। দীর্ঘ দশ বছর পর প্রথমবারের মতো আয়-ব্যয়ের হিসাব ইসিতে জমা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী; এর আগে তারা ২০১৩ সালে হিসাব জমা দিয়েছিল।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতি বছর জুলাই মাসের মধ্যে পূর্ববর্তী বছরের আর্থিক লেনদেনের প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনে দাখিল করতে হয়।