শেখ মুজিব জাতির জনক নন, তবে তার ত্যাগ স্বীকার করি: নাহিদ ইসলাম
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৬:৩৯ পিএম, ১৫ আগস্ট ২০২৫
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম দাবি করেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জাতির জনক নন। তবে স্বাধীনতা অর্জনে তার ভূমিকা ও ত্যাগকে স্বীকার করেন তিনি। একই সঙ্গে উল্লেখ করেন, মুজিব শাসনামলের জাতীয় ট্রাজেডি আজও স্মরণীয়।
শুক্রবার বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই মন্তব্য করেন।
পোস্টে নাহিদ ইসলাম লেখেন, শেখ মুজিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ভারতের একটি উপনিবেশে পরিণত হয়েছিল। ১৯৭২ সালে জনবিরোধী সংবিধান চাপিয়ে দেওয়া হয় এবং সেই সময় থেকেই লুটপাট, রাজনৈতিক হত্যা ও একদলীয় বাকশাল একনায়কতন্ত্রের ভিত্তি স্থাপন করা হয়।
এনসিপি প্রধানের দাবি, আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট রাজনীতির আড়ালে মুজিব পূজা ও মুক্তিযুদ্ধ পূজা জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। নাগরিকদের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়, যা গণতন্ত্রের ছদ্মবেশে আধুনিক জমিদারির রূপ নিয়েছিল। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ছিল সবার সংগ্রাম, কিন্তু কয়েক দশক ধরে আওয়ামী লীগ দেশকে নিজের সম্পত্তি মনে করে মুজিব নাম ব্যবহার করে দুর্নীতি ও দমন-পীড়ন চালিয়েছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক দফার ঘোষক নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ২০২৪ সালের জনগণের বিদ্রোহ এই ‘জমিদারিত্ব’ ভেঙে দিয়েছে। কোনো ব্যক্তি, পরিবার বা মতাদর্শ আর কখনো নাগরিকদের অধিকার কেড়ে নিতে পারবে না, মন্তব্য করেন তিনি। তার মতে, ‘জাতির পিতা’ উপাধি ইতিহাসের অংশ নয়, বরং রাষ্ট্রকে সংকুচিত করে আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিস্ট করার একটি হাতিয়ার।
তিনি আরও বলেন, শেখ মুজিব ও মুক্তিযুদ্ধের নামে প্রচারিত ‘মুজিববাদ’ একটি ফ্যাসিস্ট মতাদর্শ, যা গুম, হত্যা, ধর্ষণ, মানবাধিকার লঙ্ঘন, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট, ইসলামোফোবিয়া, সাম্প্রদায়িকতা, সংখ্যালঘুদের ভূমি দখল এবং জাতীয় সার্বভৌমত্ব বিক্রির প্রতীক। তার দাবি, ষোল বছর ধরে রাজনৈতিকভাবে মুজিবকে ব্যবহার করা হয়েছে এবং তার মূর্তির আড়ালে গুম-খুন ও গণহত্যা চালানো হয়েছে।
নাহিদ ইসলামের মতে, মুজিববাদ পরাজিত করতে হলে রাজনৈতিক, আদর্শিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য এমন একটি সার্বভৌম ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়া, যেখানে কোনো দল, বংশ বা নেতা জনগণের ওপরে দাঁড়াতে পারবে না। বাংলাদেশ কারো সম্পত্তি নয়, এটি একটি গণপ্রজাতন্ত্র।