আসিফ নজরুলের বক্তব্য চিকিৎসকদের পেশাদারির ওপর সরাসরি আঘাত: ডা. রফিকুল ইসলাম
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৩:০৫ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০২৫
বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সাম্প্রতিক মন্তব্য চিকিৎসক সমাজের আত্মমর্যাদা ও পেশাদারিত্বকে সরাসরি আঘাত করেছে।
রোববার (১৭ আগস্ট) এক বিবৃতিতে তিনি এ নিন্দা জানিয়ে বলেন, “দেশব্যাপী কর্মরত চিকিৎসক সমাজকে নিয়ে ড. আসিফ নজরুলের বক্তব্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি ঢালাওভাবে চিকিৎসকদের ‘ওষুধ কোম্পানির দালাল’ আখ্যা দিয়েছেন এবং পেশার সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, যা শুধু অযৌক্তিকই নয়, চিকিৎসকদের আত্মমর্যাদা ও পেশাদারিত্বের ওপর সরাসরি আঘাত।”
তিনি আরও বলেন, যে দেশে বাবা-মা এখনও সন্তানকে চিকিৎসক বানানোর স্বপ্ন দেখেন, সেখানে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য জনমনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে বাধ্য। দায়িত্বশীল একটি পদে থেকে কতিপয় ব্যক্তির দায় গোটা চিকিৎসক সমাজের ওপর চাপানো অত্যন্ত নিন্দনীয়।
চিকিৎসকদের ত্যাগ ও অবদানের কথা স্মরণ করে ডা. রফিক বলেন, করোনা মহামারির সময় জীবন বাজি রেখে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা যে সেবা দিয়েছেন, তা জাতির ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। স্বাধীনতা সংগ্রাম, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন কিংবা সাম্প্রতিক জুলাই আন্দোলন—সবক্ষেত্রেই চিকিৎসকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এ বাস্তবতায় তাদের সম্মানহানি করার মতো বক্তব্য চিকিৎসক সমাজকে ক্ষুব্ধ করেছে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ভুল বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারে।
বিএনপির এ স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক আরও বলেন, চিকিৎসকদের কোনো পেশাগত দুর্বলতা থাকলে তা সমাধান করা সম্ভব নীতি, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও আলোচনার মাধ্যমে। কিন্তু ‘দালাল’ আখ্যা দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি অভিযোগ করেন, অতিরিক্ত পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রসঙ্গ টেনে ড. আসিফ নজরুল বিদেশে চিকিৎসা নেওয়াকে রীতিমতো উৎসাহিত করেছেন। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতেও নতুন ওষুধ বাজারজাতের সময় চিকিৎসকদের মধ্যে বিজ্ঞাপন চালানো হয়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, বিদেশের তুলনা এনে ড. আসিফ নজরুল কি পরোক্ষভাবে সেসব দেশের ব্র্যান্ডিং করে বাংলাদেশিদের সেই দেশের চিকিৎসা নির্ভরশীল করার চেষ্টা করছেন না?
ডা. রফিক তার বক্তব্যের অসৌজন্যমূলক অংশ প্রত্যাহার করে চিকিৎসকদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের আহ্বান জানান। একইসঙ্গে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতের প্রকৃত সংকট যেমন দুর্নীতি, অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা, বাজেট ঘাটতি ও ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণহীনতা—এসব সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিতে হবে।