ড্রামে খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার
বন্ধু ও তার প্রেমিকার হাতে খুন, বাসায় দুদিন লুকিয়ে রাখা হয় আশরাফুলের লাশ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ১১:২৪ এম, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
রাজধানীতে ব্যবসায়ী আশরাফুল হককে হত্যার বর্ণনাতীত ঘটনার পর দুটি ভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে তার বন্ধু জরেজুল ইসলাম ও জরেজুলের প্রেমিকা শামীমা আক্তারকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি ও র্যাব। শুক্রবার ঢাকা ও কুমিল্লায় সমন্বিত অভিযানে দুজনকে আটক করা হয়।
ডিবি ও র্যাব জানায়, কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে জরেজুলকে ধরে নিয়ে আসে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ, আর রাজধানী থেকেই শামীমাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শামীমার কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কিছু আলামতও উদ্ধার করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান মো. শফিকুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছে দুটি ড্রামের ভেতর থেকে ২৬ টুকরা মরদেহ উদ্ধার হওয়ার পরই ডিবি ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তে নিশ্চিত হওয়া যায়, দনিয়ার একটি ভাড়া বাসায় আশরাফুলকে খুন করে জরেজুল ও শামীমা দুদিন ধরে লাশ লুকিয়ে রাখে। পরে তারা দা দিয়ে মরদেহ ২৬ ভাগে কেটে দুটি ড্রামে ভরে হাইকোর্ট এলাকার সামনে ফেলে যায়।
ডিবির দক্ষিণ বিভাগের যুগ্ম কমিশনার নাসিরুল ইসলাম জানান, জরেজুলকে গ্রেপ্তারের পর দনিয়ার বাসা থেকে রক্তমাখা হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে জরেজুল হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে।
তদন্তে উঠে এসেছে, মালয়েশিয়াপ্রবাসী জরেজুল ও আশরাফুল শৈশবের বন্ধু। তিন বছর আগে ‘বিগো লাইভ’-এ শামীমা আক্তারের সঙ্গে পরিচয়ের পর জরেজুল তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরবর্তীতে আশরাফুলও শামীমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন। বিষয়টি জানতে পেরে গত মঙ্গলবার দনিয়ার বাসায় বালিশ চাপা ও হাতুড়ি দিয়ে আশরাফুলকে হত্যা করেন জরেজুল।
হত্যার পর বুধবার রাত পর্যন্ত লাশ বাসায় লুকিয়ে রাখা হয়। পরদিন সন্ধ্যায় মরদেহ ড্রামে ভরে জাতীয় ঈদগাহের পাশে ফেলে পালিয়ে যায় তারা।
পরবর্তীতে পরিচয় নিশ্চিত হলে জানা যায়, নিহত আশরাফুল রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্ত্রী, ১০ বছরের একটি মেয়ে ও সাত বছরের একটি ছেলেকে রেখে গেছেন। এ ঘটনায় আশরাফুলের বোন আনজিরা বেগম শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেছেন।