ভারতে রেকর্ড নিম্ন মূল্যস্ফীতি, বাংলাদেশ এখনো ৮ শতাংশে
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৩:০৪ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ইতিহাস গড়েছে। দেশটিতে খুচরা মূল্যস্ফীতি নেমে এসেছে ১ শতাংশেরও নিচে, যা সাম্প্রতিক দশকগুলোর মধ্যে অভূতপূর্ব সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ইকোনমিক টাইমস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে ভারতের খুচরা মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে মাত্র ০.২৫ শতাংশে। অন্যদিকে, প্রতিবেশী বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে তেমন অগ্রগতি দেখা যায়নি, এখনো তা ৮ শতাংশের ঘরেই অবস্থান করছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এর তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি সামান্য কমে ৮.১৭ শতাংশে দাঁড়ালেও সেপ্টেম্বরে তা ছিল ৮.৩৬ শতাংশ। বিশ্লেষকদের মতে, দুই অঙ্ক থেকে নামলেও ৮ শতাংশের ওপরে থাকা এই হার এখনো সাধারণ মানুষের জীবনে তেমন স্বস্তি আনতে পারেনি।
ভারতের মূল্যস্ফীতি হ্রাসের মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে খাদ্যের দাম কমে যাওয়া এবং সরকারের দেওয়া করছাড় নীতি। এ করছাড়ের ফলে গাড়ি থেকে শুরু করে নানা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমেছে, যা সরাসরি প্রভাব ফেলেছে বাজারে। ফলে ভারতের বর্তমান মূল্যস্ফীতি হার রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)-এর নির্ধারিত লক্ষ্য ৪ শতাংশেরও নিচে নেমে এসেছে।
আরবিআইয়ের সর্বোচ্চ সহনসীমা ৬ শতাংশের নিচে টানা সাত মাস ধরে মূল্যস্ফীতি স্থিতিশীল থাকার পাশাপাশি, অক্টোবরের হার অর্থনীতিবিদদের প্রত্যাশিত ০.৪৮ শতাংশের চেয়েও কম হওয়ায় এটি এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে।
অর্থনীতিবিদদের ধারণা, এই পরিস্থিতিতে ভারতের পরিবারগুলো ব্যয়ের চাপ থেকে কিছুটা স্বস্তি পাবে, যার ফলে ভোগব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে দেশের সামগ্রিক জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে আরও গতি আনবে। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, এই ইতিবাচক প্রবণতা অব্যাহত থাকলে আরবিআই আগামী মাসে নীতি সুদহার আরও কমাতে পারে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি উচ্চ অবস্থানে থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সুদ ধাপে ধাপে বাড়িয়ে ১০ শতাংশে উন্নীত করেছে। তবে অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, শুধু মুদ্রানীতির কড়াকড়ি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট নয়।
সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এবং শেখ বশিরউদ্দীন নীতি সুদহার কমানোর পক্ষে মত দিয়েছেন। তাদের মতে, সুদহার বাড়ার ফলে ঋণের প্রবৃদ্ধি কমছে এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে গতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের পরামর্শ, মূল্যস্ফীতি কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণে আনতে মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতির মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে হবে এবং বাজার ব্যবস্থাপনা আরও শক্তিশালী করতে হবে।